এলেন, সমস্যা চিহ্নিত করলেন, সুসংবাদ দিয়ে ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রী

, জাতীয়

উবায়দুল হক,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ময়মনসিংহ | 2023-08-28 19:25:48

চারদিন আগে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশে পা রেখেছিলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে চষে বেড়ালেন দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। 

নিজের মুখে বললেন, বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে সমস্যা চিহ্নিত করতেই প্রায় ৮শ’ কিলোমিটার সড়ক পথ পাড়ি দিয়েছেন।

বিরাজমান সমস্যা চিহ্নিত করার পাশাপাশি সমাধানের পথও দেখিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ এ সফরের ইতি টেনেছেন ময়মনসিংহ ঘুরে। এখানকার ঢালু সীমান্ত দিয়ে ফিরে গেছেন নিজের মেঘালয় রাজ্যে।

এ যেন এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন মানুষের হৃদয়। খুলে দিয়ে গেলেন বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনার সিংহ দুয়ার। তিনি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কঙ্কাল সাংমা।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কঙ্কাল সাংমা শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে আসেন ময়মনসিংহ নগরে।

চারদিনের বাংলাদেশ সফরে এখানকার মানুষজনের আতিথিয়তা ও ভালোবাসায় নিজের মুগ্ধতার কথা জানান এ মুখ্যমন্ত্রী।

বিকেলে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটুর সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কঙ্কাল সাংমা। এরপর দুর্গাবাড়ি মন্দির ঘুরে দেখেন।

বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মতবিনিময় করেন স্থানীয় রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে। কথা বলেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন মিলনায়তনে। এসময় মেঘালয় রাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তার সঙ্গে ছিলেন।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কঙ্কাল সাংমা মতিবিনিময় সভায় বলেন, ‘মেঘালয় ও ময়মনসিংহ সীমান্তের স্থলবন্দর গুলোকে কেন্দ্র করে দুই দেশের বানিজ্য সম্প্রসারনে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। তাই এই বিষয়ে নানান সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। দুই দেশের পারষ্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে নতুন কি কি করা যেতে পারে খুঁজে বের করা হচ্ছে।’

মুখ্যমন্ত্রী জোর দেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর ব্যবহার করে পণ্য আমদানি-রফতানি বাড়ানোর ওপর।

সাংমা খুলে দিয়ে গেলেন বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনার সিংহ দুয়ার

তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এ দু’টি স্থলবন্দরের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এ দুই স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাড়ানোর মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সম্পর্কও উন্নত হবে। এতে উভয় দেশই ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবেন।’

মতবিনিময় সভায় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু শেরপুরের নাকুগাঁও এবং হালুয়াঘাট স্থলবন্দর দিয়ে আসা কয়লা ও পাথর আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের নানা হয়রানির কথা তুলে ধরেন। তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। মূলত মেয়রের দাবির সূত্র ধরেই দু’টি স্থলবন্দর নিয়ে এমন কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদ ড্রেজিং কাজ শুরু হওয়ায় জলপথে দুই দেশের ব্যবসা বাড়ানোরও প্রস্তাব দিলে তিনি সানন্দে এ প্রস্তাব গ্রহণ করেন।

মেয়র বলেন, ‘পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষে বিভিন্ন পরামর্শ যারা দিয়েছেন ভারতের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার তা করার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’

ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘ময়মনসিংহ এবং মেঘালয় রাজ্য একে অপরের পাশে থেকে আমরা একটি সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করবো, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রে আমরা একে অপরের পাশে থাকবো। ’

এ সম্পর্কিত আরও খবর