গাড়ি চাপায় মৃত্যুতে সমঝোতা হলেও মামলা আদালতে গড়াবে

, জাতীয়

সাব্বির আহমেদ ও শাহরিয়ার হাসান | 2023-08-27 13:46:34

ঢাকা: মহাখালীতে এমপি পরিবারের গাড়ি চাপায় নিহত সেলিমের পরিবারকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে মামলা তুলে নিতে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা বলছেন, এ ধরনের মামলায় দরখাস্ত করে মীমাংসা করা যায় না। পুলিশ প্রতিবেদন দেবে, তারপর আদালতে সে আলোকে বিচার হবে। দোষী প্রমাণিত হলে ৭ বছরের জেল হবে।

সোমবার (২৫ জুন) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, ‘আমি যতদূর শুনেছি এবং জেনেছি, মামলার ধারা হচ্ছে ২৬৯ এবং ৩০৪। এই দু’টো ধারা আপোষযোগ্য নয়।’

আইনমন্ত্রী আরও জানান, ‘বাদীপক্ষ দরখাস্ত দিয়েছেন তাতে যে ব্যক্তি মারা গেছেন তিনিই ভুল করেছেন বলা হয়েছে। সে কারণে তারা আপোষ করার পক্ষে। কিন্তু যতই দরখাস্ত দেওয়া হোক না কেন- ধারা অনুযায়ী এটি অমীমাংসাযোগ্য মামলা। সে কারণে সম্পূর্ণ তদন্ত হবে। যে তথ্য প্রমাণাদি উপাত্ত বের হয়ে আসবে তার ওপর ভিত্তি করে পুলিশ প্রতিবেদন দেবে। শেষে আদালতে সেটার বিচার হবে।’

আইনজীবীদের মতে, আদালতের বাইরে মীমাংসার সুযোগ নেই। এ মামলায় সর্বোচ্চ সাজা ৭ বছরের জেল হতে পারে।

এ বিষয়ে ফৌজদারী আইনের একজন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী রোজী সবুর বলেন, এ ধরনের মামলায় সাক্ষী পাওয়া কঠিন হয়- তারপরও আপোষ হয় না।

‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ভিকটিম পরিবার মামলা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা পায় না। আর এসব মামলা, স্টাবলিশ’ করা কঠিন হয়’ বলেন রোজী সবুর।

এমপি পরিবার ও নিহতের পরিবারের মধ্যে সমঝোতা প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছেন এমন একজন নাম প্রকাশ না করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এমপি পরিবারের কাছে এককালীন ৫০ লাখ টাকা চেয়েছিলো নিহতের পরিবার। তারপর এমপি পরিবার থেকে ১৫/১৬ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। আর প্রতি মাসে ভরণপোষণের জন্য ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।’

কাফরুল থানার ওসি বার্তা২৪.কমকে বলেন, মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়ে কোনো আবেদন থানায় আসেনি। আমরা আমাদের মতো তদন্তরের কাজ করে যাচ্ছি। সমঝোতার বিষয়ে কিছুই জানি না।

মিরপুর জোনের এডিসি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি পারিবারিকভাবে তাদের সমঝোতা হয়েছে। তবে থানা পুলিশ না আদালদের মাধ্যমে তারা নিষ্পত্তি করতে যাচ্ছে- সেটা আমি জানি না।’

মহাখালী এলাকায় গত ১৯ জুন নোয়াখালী- ৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর স্ত্রী কবিরহাট (নোয়াখালী) উপজেলার চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার শিউলির গাড়ি চাপা পড়ে নিহত হন আরেক গাড়ি চালক সেলিম। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা গাড়ি নাম্বার প্লেট ধরে ওই রাতে বার্তা২৪.কম নিশ্চিত হয়। পরে সংবাদ প্রকাশ হয় এমপি পরিবারের গাড়িতে নিহত হয়েছেন সেলিম। এ ঘটনায় দু’জন প্রত্যক্ষদশী গাড়ি চালক হিসেবে এমপি ছেলে সাবাব চৌধুরীকে দেখেছেন বলেও জানান। কিন্তু সাবাব চৌধুরী শুরু থেকে দাবি করছেন তিনি নোয়খালীতে ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর