ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ধারণা এখনও পরিষ্কার নয়

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-19 22:21:51

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ধারণা এখনও পরিষ্কার নয়। এ ধারণাটি এখন পরিবর্তনশীল।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে 'ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ-১৯' এর দ্বিতীয় দিনের এক সভায় এ কথা বলেন তিনি।

শাহরিয়ার আলম বলেন, এখনও এটার ধারণা পরিষ্কার নয়। কয়েকটি দেশ এটিতে যুক্ত হবে, এর ভৌগোলিক সীমা কত দূর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তারপরও এটির বিশাল সম্ভবনা রয়েছে।

মানুষ চায়, তারা যেন মুক্তভাবে ভ্রমণ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে আসিয়ান একটি মডেল হতে পারে। তবে তাদের এ অবস্থায় আসতে সময় লেগেছে। তারপরও তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মত এক মুদ্রা চালু করতে পারেনি, যোগ করেন তিনি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, অন্য অঞ্চলের যে সংকট রয়েছে, তা থেকে ইন্দো-প্যাসিফিক অনেকটাই মুক্ত। সবচেয়ে বর্ধনশীল অর্থনীতি এ অঞ্চলকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। ধারণাটি খুব ভালো। বিমসটেক, সার্কসহ অন্যান্য সংস্থা আরো কার্যকর করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়া ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণার জন্য একটি বড় শক্তি হতে পারে।

ভারতের লোকসভা সদস্য মনীশ তাওয়ারি বলেন, তিনদিন আগেই আমি পাকিস্তানের কর্তারপুরে গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য যাই। ৭০ বছর আগে ইংরেজ রেডক্লিফ এ অঞ্চলকে যত্রতত্র ভাগ করে দিয়ে গেছে। এ জন্য পাঞ্জাব ও বাংলার ওপর সবচেয়ে বড় চোট পড়ল। অনেক রক্তগঙ্গা বইল। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একুশ শতক হল এশিয়ার শতক। এ জন্য আমাদের মাইন্ডসেট চেঞ্জ করতে হবে ইতিবাচক উন্নতির লক্ষ্যে। বেল্ট অ্যান্ড রোড নিয়ে ভারতের কিছুটা রক্ষণশীলতা আছে। সব কিছু চায়নার অর্থে করা হবে। রুজি রুটির জন্য চীনের সড়কে গাড়ি চালাতে আমার কোনো অসুবিধা নেই।

ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মিনওয়াং লিন বলেন, আমি মনে হয় একমাত্র চীনা, যে এ ডায়ালগে অংশ নিয়েছি। বেশ কিছু চীনের নেতা ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে কথা বলছেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, এমন একটি নতুন চিন্তা ভাবনা সম্পর্কে। চীন সরকারের অবস্থা হল, কেন তারা একটি নতুন ধারণায় যোগ দেবে।

১৯৪২ সালে জাপান যখন তাইওয়ান দখল করে, তখনও ওই অঞ্চল নিয়ে নতুন ধারণা দিয়েছিল। সম্প্রতি কোনো আসিয়ান দেশ ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা ডায়ালগে অংশ নেয়নি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমার প্রশ্ন, কেন পাকিস্তান এটিতে নেই? সব দেশের নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা আছে, তা নিয়েই তারা এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও সুখি স্থান বলেই গ্লোবাল ডায়ালগ এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভারতের অর্থনীতি দ্রুত বর্ধনশীল। বিভিন্ন পরিসংখানে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ২০৩০ সালের মধ্যে এ অঞ্চলের ২৫টি দেশের অর্থনীতি ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। বাংলাদেশ হচ্ছে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। কানেক্টিভিটি ভারতের জন্য একটি মূল বিষয়। কারণ দুই দেশেই এক্ষেত্রে উইন উইন সাফল্য হতে পারে। উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভারতের যোগাযোগে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ জন্য দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এক নয়। বেল্ট একটি প্রকল্প। ইন্দো-প্যাসিফিক একটি স্বাভাবিক অঞ্চল।

অক্সকোনের মহাপরিচালক মোহাম্মদ এল দহশান সভাটি সঞ্চালনা করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর