পেঁয়াজ ব্যবহারে সতর্ক গৃহিণীরা, কমেছে বিক্রি

ঢাকা, জাতীয়

সাদিয়া কানিজ লিজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম ঢাকা | 2023-08-30 15:14:49

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত দেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষ। দেড়-দুই মাস ধরে ধাপে ধাপে পেঁয়াজের দাম বাড়লেও গত দুই-তিন দিনে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি ঘণ্টায়। পেঁয়াজের দাম মাত্রাতিরিক্ত বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে রান্নাবান্নায় এবং দোকানের কেনাবেচায়। এমন পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবিলা করছেন গৃহিণী এবং দোকানিরা, সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের প্রতিবেদক।

কাঠালবাগান এলাকার পার্লার ব্যবসায়ী এবং গৃহিণী লিলি ঘাগরা বলেন, 'আগে যে তরকারিতে ৪-৫টা পেঁয়াজ ব্যবহার করতাম এখন সেখানে একটা পেঁয়াজ ব্যবহার করছি। গত মাসের ৮-৯ তারিখে তিন কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম, যা এখনও চলছে। আমার ছোট সংসার বলে চলছে কিন্তু বড় সংসার হলে চলতো না। তবে পেঁয়াজের দাম কমাতে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া উচিত।'

হাতিরপুল এলাকার গৃহিণী রত্না বেগম বলেন, 'তরকারিতে বেশি পেঁয়াজ দেওয়ার অভ্যাস আমার। কিন্তু দাম বাড়ায় তা আর পারছি না। আগে এক কেজি মা়ংসে ১০-১২টা পেঁয়াজ দিতাম। এখন ৪-৫টা দিয়েই কাজ চালিয়ে নিচ্ছি।'

ধানমন্ডি ১৫/এ এলাকার গৃহিণী মাসুমা আক্তার মমতা বলেন, 'এখন একটু চিন্তা-ভাবনা করে পেঁয়াজ ব্যবহার করছি। যখন ১৬০ টাকা কেজি ছিল তখন ৩-৪ কেজি কিনেছিলাম সেটা দিয়েই চালাচ্ছি।' মজার ছলে তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজের বদলে অন্য কিছু ব্যবহার করে তরকারি রান্না করা যায় কিনা তাই ভাবছি। তবে শুনেছি, পেঁপে কুচি করে দিয়ে রান্না করলে তরকারি ভালো হয়।'

পেঁয়াজ কাটায় ব্যস্ত গৃহিণী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর-১১ নাম্বার এলাকার গৃহিণী ইসরাত সুলতানা বলেন, 'যেকোনো তরকারির স্বাদ বাড়াতে আমরা পেঁয়াজ একটু বেশি ব্যবহার করি। তাছাড়া চার-পাঁচজন সদস্যের সংসারে একটু বেশি রান্না করা লাগে। কিন্তু এখন রান্নায় পেঁয়াজের পরিমাণ একদম কমিয়ে দিয়েছি। সবজিতে পেঁয়াজ দেই না। বড় পেঁয়াজ হলে একটা দিয়ে দুটো তরকারিও রান্না করেছি।'

এদিকে, বিভিন্ন এলাকার মুদি দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম ভিন্ন। ২৩০ টাকা থেকে শুরু করে ২৬০-২৭০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হচ্ছে।

রাজধানীর ভূতের গলি এলাকার বেশিরভাগ মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, দাম বাড়ায় বিক্রি কমে গেছে। ফলে তারা দোকানে পেঁয়াজ রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। দাম কমলে আবার পেঁয়াজ উঠাবেন।

এ বিষয়ে দোকানদার আবু তাহের জানান, পেঁয়াজের দাম যেদিন থেকে ১০০ টাকার বেশি হয়েছে সেদিন থেকে দোকানে পেঁয়াজ রাখছেন না। কারণ এতে লোকসান হয়। ক্রেতারা বেশিরভাগই আধা কেজি করে পেঁয়াজ কেনেন। দাম কমলে আবার রাখবেন।

অপর আরেক দোকানি মো. রাসেল জানান, সকালে কারওয়ান বাজারে গিয়ে পেঁয়াজের দাম ২৮০ টাকা জানতে পারেন। এরপর পেঁয়াজ না কিনেই তিনি দোকানে ফেরেন।

কারওয়ান বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা সবুর জানান, ফরিদপুরের পেঁয়াজ তিনি বিক্রি করছেন ২২০ টাকা কেজি দরে। আগে যারা পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনতেন তারা এখন সর্বোচ্চ দুই কেজি কিনছেন। বাজেট আগের মতো থাকলেও চাহিদা কমেছে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর কারওয়ান বাজারের আড়তে দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২২০-২২৫ টাকা, বার্মিজ পেঁয়াজ ২১৫-২২০ টাকা এবং মিশরের পেঁয়াজ ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর খুচরা বাজারে এসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৫০ টাকায়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর