নতুন সড়ক আইন সংশোধন না করার প্রতিবাদে খুলনায় তৃতীয় দিনের মতো বাস চালকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। বুধবার (২০ নভেম্বর) খুলনা থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূর পাল্লার কোনো রুটে বাস চলাচল করেনি। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের তীব্র চাপ বেড়েছে খুলনা রেল স্টেশনে। অনেকে টিকিট না পেয়েও জোর করেই ট্রেনে উঠছেন।
এর আগে চলমান পরিবহন ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে স্থানীয় সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে মধ্যস্থতার প্রেক্ষিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা চলমান পরিবহন ধর্মঘট শিথিল করে নেন। তবুও বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মেনে বুধবারও বাস চলাচল বন্ধ রাখে শ্রমিকরা।
পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বের হতে চায়না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে খুলনার সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো পরিবহন ছেড়ে যায়নি। তবে ভোরের দিকে কিছু বাস মাওয়া রুটে ছেড়ে যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সেগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। এ সুযোগে মাহিন্দ্র, মিনি পিকআপ, মাইক্রোবাসসহ ছোট গাড়িগুলোতে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে।
আন্দোলনরত বাস চালকরা বলছেন, নতুন আইনে দুর্ঘটনার জন্য চালকদেরই দায় নিতে হচ্ছে। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে। চালকরা ইচ্ছা করে দুর্ঘটনা ঘটায় না। তারপরও তাদের শাস্তি হবে। এ আইন মেনে নেওয়া যায় না। যার প্রতিবাদে চালকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, নতুন সড়ক আইনের কিছু ধারায় মালিক ও চালকদের কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এ কারণে চালক ও মালিকরা ভয়ে গাড়ি বের করছেন না।
তিনি আরো জানান, বাস চলাচলের জন্য মঙ্গলবার সকালে খুলনা সার্কিট হাউসে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তবে চালকরা বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানেনি।
এদিকে, খুলনা থেকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় খুলনা রেল স্টেশনে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। অনেক যাত্রী টিকিট না পেয়েও জোর করে ট্রেনে উঠছেন।
রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা আলমগীর মাহমুদ বলেন, বাস বন্ধ আছে এজন্য ট্রেনের টিকিট খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। ট্রেনে অনেক চাপ, কিভাবে যাবো বুঝতে পারছি না।
ট্রেনের টিকিট চেকার ইলিয়াস হোসেন বলেন, যাত্রীদের কাছে টিকিট না থাকলেও ভিড়ের কারণে আমাদের কিছুই করার নেই।