আচার কিনলে পেঁয়াজ ফ্রি!

রাজশাহী, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী | 2023-08-27 18:14:13

পেঁয়াজের বাজার এখন আগুন। তিন দিন আগেও দাম উঠেছিল ৩০০ টাকা কেজি । এখন কিছুটা কমলেও নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাদের। তাই পেঁয়াজ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে এই পেঁয়াজ রাজশাহীতে পাওয়া যাচ্ছে একদম বিনামূল্যে!

রাজশাহী নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় চলমান ‘শীত বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলা’য় এক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ ফ্রি দিচ্ছেন। তবে বিনামূল্যে পেঁয়াজ নিতে হলে তার দোকান থেকে কিনতে হবে আচার। ২০০ টাকার আচার কিনলে ফ্রি দেওয়া হচ্ছে ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ। আচারের বিক্রি বাড়াতে এমন কৌশল অবলম্বন করেছেন তিনি।

কৌশলী এই আচার ব্যবসায়ীর নাম শহিদুল হক হায়দারি। তিনি চাঁপাইনবানগঞ্জের বাসিন্দা। গত ১৩ নভেম্বর থেকে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় শীত বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলায় আচারের দোকান বসিয়েছেন। দোকানে টাঙানো রয়েছে পেঁয়াজ ফ্রি দেওয়ার একটি বিজ্ঞাপন। তা দেখে শহিদুলের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়।

বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকালে তার দোকানে গিয়ে দেখা যায়, দোকানে ১৫ রকমের আচার সাজিয়ে রেখেছেন শহিদুল। আর দোকানের এক পাশে রেখেছেন ব্যানার। সেখানে লেখা- ‘২০০ টাকার আচার কিনলেই ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ ফ্রি। আর এই বিচিত্র ব্যানার দেখেই আকৃষ্ট হচ্ছেন আচার প্রিয় মানুষেরা। কেউ কেউ ব্যানারের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন।

বিভিন্ন দামের, বিভিন্ন রকমের আচার থরে থরে সাজিয়ে রেখেছেন শহিদুল। ১০০ গ্রাম আমের আচার, আমসত্ব, জলপাইয়ের আচার ও চালতার আচার ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ১০০ গ্রাম তেঁতুল আচার ও বরই মিক্সড আচার এবং রসুনের আচার পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ১০০ গ্রাম মরিচ আচার ও কদবেলের আচার কিনতে হবে ৪০ টাকায়। তবে কেউ যদি ২০০ টাকার যে কোন আচার কেনেন তাহলে সাথে সাথে পেয়ে যাবেন এই সময়ের দামি পণ্য পেঁয়াজ।

দোকানে আচার কিনতে এসেছিলেন কলেজ ছাত্রী জুহিন হক। তিনি বলেন, আমি আম, জলপাই ও চালতার আচার কিনেছি ৩০০ টাকার। এর সাথে পেঁয়াজ ফ্রি পেয়েছি। ব্যাপারটি আসলেই নতুন। বিভিন্ন পণ্যের সাথে অনেক রকমের পণ্য ফ্রি পেয়েছি। কিন্তু আচারের সাথে পেঁয়াজ ফ্রি এই প্রথম।

দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন কাওসার হোসেন। তিনি বলেন, ‘ছবিটি ফেসবুকে দেব। এ রকম তো এর আগে কখনো দেখিনি। তবে ভালোই হয়েছে, পেঁয়াজের দাম এখন বেশি। তাই ব্যাপারটি আকর্ষণীয়।’

পেঁয়াজ ফ্রি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আচার ব্যবসায়ী শহিদুল বলেন, ‘আমার আচারের কোম্পানির প্রচারের জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছি। এখন পেয়াঁজের দাম বেশি। তাই অন্য খেলনা বা কসমেটিকস না দিয়ে পেঁয়াজ দিচ্ছি।’

অভিনব এ কৌশলে সাড়া কেমন পাচ্ছেন জানতে চাইলে শহিদুল বলেন, ‘প্রতিদিন আমার ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার আচার বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৯ কেজির মতো পেয়াঁজ দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন সাহেব বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনে আনি। যা আনছি তা প্রতিদিনই শেষ হয়ে যাচ্ছে। আশা করছি বাকি দিনগুলোও খুব ভালো বিক্রি হবে।’

শহিদুল জানান, ২০১৬ সালে ‘চাঁপাই ম্যাংগো’ নামে একটি আচারের ফ্যাক্টরি চালু করেন তিনি। এর সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরাও জড়িত। শহিদুল বিভিন্ন মেলায় স্টল দিয়ে আচার বিক্রি করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, কানসাট ও সোনামসজিদে তার আচারের শো-রুমও আছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর