২০১৬ সালের ১ জুলাই, শবে কদরের রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ২৪ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন পাঁচ হামলাকারীও। জঙ্গিদের হাত থেকে জাপানি সহায়তা সংস্থা জাইকার কর্মকর্তা থেকে অন্তঃসত্ত্বা নারীও সেদিন রেহাই পাননি।
সেদিন নিহত ২৪ জনের মধ্যে ১৭ জনই বিদেশি। এর মধ্যে নয়জন ইতালির নাগরিক, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতীয় নাগরিক। এছাড়া একজন বাংলাদেশ- আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক, দু’জন সাধারণ নাগরিক, হলি আর্টিজানের দুই কর্মচারী ও দুই পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন নিহতদের মধ্যে।
সেদিন নিহত ইতালীয় নাগরিকরা হলেন ফেডো ট্রেডিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস ক্লাওদিয়া মারিয়া ডি এন্তোনা (৫৬), সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মিসেস সিমোনা মন্টি (৩৪), স্টুডিও টেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস নাদিয়া বেনেডেট্টি (৫১) ও সুপারভাইজার মার্কো টোনডাট (৪১), একটি টেক্সটাইল গ্রুপের মাননিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাপক মিসেস আদেলে পুগলিসি (৫৫), ক্রিশ্চিয়ান রসি (৪৭), একটি টেক্সটাইল কোম্পানির মালিক ক্লাদিও ক্যাপেলি (৪৫), মিসেস ভিনসেনজো ডি অ্যালেস্ট্রো (৪৫) ও মিসেস মারিয়া রিবোলি (৩৩)।
নিহত জাপানি নাগরিকরা হলেন মেট্রোরেল প্রকল্পের সমীক্ষা কাজে নিয়োজিত হিরোশি তানাকা (৮০), কোয়ো ওগাসাওয়ারা (৫৭), ইয়োকি সাকাই (৪২), নোবুহিরো কোরুসাকি (৪৯), মাকোটো ওকামুরা (৩২), রুই সিমোডাইরা (২৯) ও হিডেকি হাশিমোটো (৬৫)।
নিহত ভারতীয় নাগরিক হলেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার ছাত্রী তারিশি জৈন (১৮)।
নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক রাজধানীর গুলশান-২ এর ৫০ নম্বর রোডের বাসিন্দা মো. এহসানুল কবিরের মেয়ে অবিন্তা কবির (২০) এবং ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেন (২০) ছিলেন।
ঘটনার শুরুতেই জঙ্গিদের বোমার আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে মারা যান বনানী থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন খান ও ঢাকা মহানগর (উত্তরের) গোয়েন্দা পুলিশের এডিশনাল কমিশনার রবিউল করিম।
হলি আর্টিজান বেকারির দুই স্টাফ শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার কুলকাঠি গ্রামের হাসেম চৌকিদারের ছেলে সাইফুল চৌকিদার (৪০) ও নারায়ণগঞ্জ সদর থানার একরামপুর গ্রামের আব্দুল সাত্তার সরকারের ছেলে জাকির হোসেন শাওন (২২)।
এছাড়া সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ এ পাঁচ জঙ্গি নিহত হন। তারা হলেন বনানী ডিওএইচএসের মীর হায়াত কবিরের ছেলে মীর সামহ মোবাশ্বের, লালমাটিয়ার এসএম ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে রোহান ইমতিয়াজ, উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের নজরুল ইসলামের ছেলে নিবরাস ইসলাম, বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর থানার আবুল হোসেনের ছেলে খায়রুল ইসলাম পায়েল ও বগুড়ার ধুনট থানার বদিউজ্জামান বদির ছেলে শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ওরফে বিকাশ।
জঙ্গিদের লাশ তাদের পরিবার গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।