শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সম্প্রতি দাবি আদায়ের নামে তথাকথিত আন্দোলন করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন জিম্মি করে ফেলছে একটি পক্ষ। তবে সরকারের মন্ত্রী হিসেবে আমি বলি- যখন দেশে ক্ষমতায় শেখ হাসিনার সরকার, তখন যৌক্তিক দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলন নয়, সরকারকে অবহিত করুন। সরকার পদক্ষেপ নেবে, নিশ্চিত সমাধান হয়ে যাবে।’
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শেখ কামাল স্টেডিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাদশ সমাবর্তনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা রাজনীতির নামে নোংরামিতে জড়িয়ে পড়তে দেখছি। বর্তমান সরকার এটি বরদাশত করবে না। তাই আমি বলব- শিক্ষকরা রাজনীতির নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে না।’
ডা. দীপ মনি আরও বলেন, ‘গ্রাজুয়েটদের বর্তমানের কর্মবাজারের চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আমরা দুই ধরনের কথা শুনে থাকি। যারা চাকরি দেন তারা বলেন- যোগ্য গ্রাজুয়েট পান না। আর যারা চাকরি খোঁজেন, তারা বলেন- দেশে চাকরির ক্ষেত্র কম। এ থেকে একটি বিষয় প্রতীয়মান যে- আমরা যোগ্য গ্রাজুয়েট গড়ে তুলতে পারছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কর্ম বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘গবেষণা কাজ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র সনদ বিলির প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। যা দেশ ও জাতির ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ হবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজে বেশি মনোযোগী হতে হবে।’
এর আগে বিকেল পৌনে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে একাদশ সমাবর্তন শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তৃতা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান। উপাচার্যের বক্তৃতার পর সমাবর্তন বক্তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্তী তার বক্তৃতা প্রদান করেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে অংশ নেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ও নাট্যজন মলয় কুমার ভৌমিক।
এর আগে বিকেল ৩টায় হেলিকপ্টারযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হলের মাঠে অবতরণ করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পরে উপাচার্যের বাসভবনে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।