সাভারে এলপিজি গ্যাসের রমরমা ব্যবসা

ঢাকা, জাতীয়

মাহিদুল মাহিদ, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা) | 2023-08-27 07:55:32

শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় প্রায়ই অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকায় এলপিজি গ্যাসের চাহিদা বেড়েছে। এই চাহিদাকে পুঁজি করে পানের দোকান, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে বিক্রির জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আর এই শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকরা তা অবাধে কিনছেন। তাই দুর্ঘটনার শঙ্কাও পিছু ছাড়ছে না সাধারণ শ্রমিকদের।

আইনের তোয়াক্কা না করেই সাভার আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে গড়ে উঠেছে এসব সিলিন্ডার ব্যবসা। আইন অনুযায়ী খুচরা ব্যবসায়ীদের ৮টির বেশি এলপিজি সিলিন্ডার মজুদ রাখা যাবে না বলে নিয়ম থাকলেও তারা এর অনেক বেশি পরিমাণ মজুদ করছেন।

১৯৮৪ এর ‘দ্য এলপি গ্যাস রুলস ২০০৪’ এর ৬৯ ধারার (২) বিধি মোতাবেক ৮টির বেশি সিলিন্ডার মজুদ করলে লাইসেন্স নিতে হবে। সেই সঙ্গে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র মজুদ রাখতে হবে। এই আইন অমান্য করলে ২ বছর বা ৫ বছরের জেলসহ ৫০ হাজার টাকা দণ্ডিত হবেন ব্যবসায়ীরা। অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে অতিরিক্ত আরও ৬ মাস পর্যন্ত জেলের বিধান রয়েছে। কিন্তু সঠিকভাবে আইনের প্রয়োগ না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে বেড়েই চলেছে এই সিলিন্ডারের মজুদ।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সাভার আশুলিয়া এবং ধামরাইয়ের বিভিন্ন বাজার ও রাস্তার পাশের দোকান ঘুরে দেখা যায়, নাম মাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে অবৈধভাবেই তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দিনের পর দিন। তাদের কারো দোকানে নেই অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, নেই কোনো বিস্ফোরক অধিদফতরের অনুমতি, ফায়ার সার্ভিসের কোনো রকম লাইসেন্স ছাড়াই তারা এই এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের রমরমা ব্যবসা করছেন। ওমেরা, বসুন্ধরা, পদ্মা, যমুনাসহ বিভিন্ন কোম্পানির সিলিন্ডার বিক্রির জন্য শিকল দিয়ে পানের দোকান, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে প্রায় সব দোকানেই বাঁধা রয়েছে। তারা সেগুলো বিক্রি করছে ১১শ থেকে ১২শ টাকায়।

আশুলিয়ার মদিনা ফার্নিচার দোকানের মালিক হাসেম জানান, কয়েক দিন পরপরই অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় গ্যাসের চাহিদা ব্যাপক। এখানকার সবাই গার্মেন্টসে চাকরি করে। তারা এই সিলিন্ডার কেনেন।

ধামরাইয়ের মুদি দোকানি আরিফ বলেন, ‘শ্রমিকদের হাতে সব সময় টাকা থাকে না। আমার দোকান থেকে প্রায় ৩০ জন শ্রমিক বাকিতে বাজার নেয়। তাদের আবদারেই এই গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করতে হয়। তবে আমার কাছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগৃহীত ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আর কোনো লাইসেন্স নাই।’

এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স নিতে হয়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয় থেকেও ছাড়পত্র নিতে হয়।

এ ব্যাপারে সাভার ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অবৈধ ব্যবসায়ীদের তালিকা করা হচ্ছে, সেই তালিকা অনুযায়ী আমাদের পরিদর্শকরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর