ফাঁস জাল ৭ সেমি. হলে ইলিশ মজুদ হবে ৭ লাখ ২১ হাজার টন

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 12:09:42

ইলিশ ধরতে ব্যবহৃত ফাঁস জালের আকার ৭ সেন্টিমিটার নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছেন বিজ্ঞানী জলিলুর রহমান। এতে বছরে ৭ লাখ ২১ হাজার টন ইলিশ মজুদ থাকবে, যা টাকার অংকে দাঁড়াবে ১০০ হাজার কোটি টাকা।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ‘ইলিশ আহরণের জন্য ফাঁস জালের অনুমোদনযোগ্য ফাঁসের আকার নির্ধারণ বিষয়ক পর্যালোচনা সভা’য় প্রস্তাব তুলে ধরে হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মন্ডলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খসরু।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৎস্য অধিদফতর বাংলাদেশের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ। এ সময় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান দিলদার আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ (ব্লু-ইকোনমি) যুগ্মসচিব তৌফিকুল আরিফ এবং ইকোফিশ-বাংলাদেশ প্রকল্পের টিম লিডার আবদুল ওহাব। এ ছাড়াও মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তা, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, গবেষকরা পর্যালোচনা সভায় অংশ নেন।

সভায় বলা হয়, আগে ইলিশ ধরার জন্য জেলেদের জালের নির্দিষ্ট সীমা ছিল সাড়ে ৪ সেন্টিমিটার। এবার তা বাড়িয়ে সাড়ে ৬ সেন্টিমিটার বা দুই দশমিক ৬ ইঞ্চি নির্ধারণের কথা ভাবছে মন্ত্রণালয়। তবে এর পক্ষে-বিপক্ষে মতামত থাকায় নির্দিষ্ট সীমা পেতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে।

প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনেকেই এর বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, এবার জাটকা নিধনে কঠোর নজরদারি করার কারণে ইলিশের আকার বড় হয়েছে। এতে লাভবান হয়েছেন জেলেরা, সমৃদ্ধ হচ্ছে অর্থনীতি। আবার কবে বা কত বছরে এ জালের আকার নির্ধারণ হবে তা অজানা। তবে সার্বিক বিবেচনা করে এর আকার ৭ সেন্টিমিটার করা হলে ভালো হবে। এর মাধ্যমে যদি ২৭ সেন্টিমিটারের ছোট ইলিশ ধরা না হয়, তাহলে সর্বোচ্চ টেকসই উৎপাদন ৭ লাখ ২১ হাজার টন হবে।

বিজ্ঞানী জলিলুর রহমান বলেন, আমি বিশ্বাস করি সর্বসাকুল্যে ফাঁস জালের আকার সাড়ে ৬ সেন্টিমিটার হওয়া উচিত। এতে জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ হয়ে যাবে, আরও বড় আকারের ইলিশ আসবে জেলের জালে।

অন্যদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ (ব্লু-ইকোনমি) যুগ্ম-সচিব তৌফিকুল আরিফ বলেন, আমরা আবার কবে নাগাদ ফাঁস জালের আকার নির্ধারণ করবো জানি না। তবে সার্বিক বিবেচনা করে এর আকার ৭ করা হলে ভালো হবে। এর মাধ্যমে যদি ২৭ সেন্টিমিটারের ছোট ইলিশ ধরা না হয় তাহলে সর্বোচ্চ টেকসই উৎপাদন ৭ লাখ টনের বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে।

ইকোফিশ-বাংলাদেশ প্রকল্পের টিম লিডার আবদুল ওহাব বলেন, জেলে ও ট্রলার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি জালের ফাঁস সাড়ে ৬ সেন্টিমিটার করার। এটা নতুন করে পরিবর্তন করা হলে জেলে, নৌকা মালিকদের বুঝাতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। নয়তো জেলেরা আবারও আন্দোলনে যাবে। সুতরাং সাড়ে ৬ সেন্টিমিটারেই থাক।

সবার বক্তব্য শুনে আশরাফ আলী খসরু বলেন,ফাঁস জালের আকার নির্ধারণ নিয়ে আরও আরও আলোচনা করার দরকার আছে। আমরা দেশের জন্য, দেশের অর্থনীতির জন্য আমরা ফাঁস জালের আকার নির্ধারণ করতে যাচ্ছি। তবে যেহেতু শেষ পর্যায়ে আছে, আশা করি কম সময়েই এর আকার নির্ধারণ হবে। ছোট ইলিশ ধরা বন্ধ করার কারণে এবারের সিজনে যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়েছে তা গত পাঁচ বছরেরও এতো পরিমাণ বড় ইলিশ ধরা পড়েনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর