কোচ শনাক্তকরণ সেবায় রেল স্টেশনের দুর্ভোগ হ্রাস

ঢাকা, জাতীয়

পারাবত এক্সপ্রেস থেকে সিরাজুল ইসলাম, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 15:29:17

ট্রেন এলেই বগির জন্য ছুটোছুটি থেকে ধাক্কাধাক্কি লেগেই থাকতো রেল স্টেশনগুলোতে। যাত্রীদের সেই ঝামেলা দূর করেছে ডিজিটাল কোচ সনাক্তকরণ সেবা।

রেল স্টেশনগুলোতে বসানো হয়েছে বড় বড় ডিজিটাল স্ক্রিন। যেখানে ট্রেনের নাম ও বগি নম্বর শোভা পাচ্ছে। মাস তিনেক আগে এ সেবাটি চালু হয়েছে বিমানবন্দর ও কমলাপুর রেল স্টেশনে। বেশ ভালো উদ্যোগ বলতে হবে। এতে কোচের অবস্থান আগে ভাগেই জানতে পারছে যাত্রীরা। ফলে আগে থেকেই মালপত্রসহ অবস্থান করতে পারছে। ট্রেন দেখার পর আর ছুটতে হচ্ছে না যাত্রীদের।

সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেসের যাত্রী শাকিল মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'উদ্যোগটি খুবই ভালো। তবে অনেক সময় নির্দিষ্ট পয়েন্টে দাঁড়াচ্ছে না ট্রেন। সেদিন রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেসকে দেখলাম দুই তিনটি বগি হেরফের করে দাঁড়ালো। ট্রেন দাঁড়ানোর পর মনিটরে সংশোধনী দেওয়া হলো। তবুও ভালো যাত্রীরা কাছাকাছি থাকতে পারছে। আগেতো স্টেশনের একমাথা থেকে অন্য মাথায় ছুটতে হতো। মহিলা ও শিশু যাত্রীদের কী অবস্থা হতো। যাদের মালামাল বেশি তাদের কথা আর নাইবা বললাম। কি যে ভোগান্তি হতো বলে শেষ করা যাবে না।'

আমার কাছেও সেবাটি দারুণ মনে হলো। তবে আরও কিছুটা আন্তরিকতা এবং সংশোধনীর প্রয়োজন রয়েছে।

ট্রেনের জন্য অপেক্ষারত যাত্রী, ছবি: বার্তা২৪.কম

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস আগমনের ঘোষণা দেওয়া হলো সকাল ৭ টায়। মিনিট খানেক পর বগির পজিশন ভেসে উঠলো মনিটরে। খানিকটা হুড়োহুড়ি লেগে পড়লো বগির পজিশনে যাওয়ার জন্য।

২ মিনিট পর হুইসেল বাজিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করলো ট্রেন। ট্রেন আসার পূর্বে অনেকেই বগির পজিশনে যেতে পারলেন না। পুরোপুরি দুর্ভোগ থেকে মুক্ত হতে পারছেন না যাত্রীরা।

যাত্রীরা মনে করছেন ধীরে ধীরে হয়তো ব্যবস্থা ভালো হয়ে যাবে। আগে ভাগে স্ক্রিনে বিস্তারিত সবকিছু দেওয়া হবে, চালকরাও অভ্যস্ত হয়ে পড়বে ও ট্রেন যথাস্থানে দাঁড়াবে। সেটি কি কৌশলগতভাবে সম্ভব! কয়েক মিনিট পরপর ট্রেন আসবে। তাহলে বেশিক্ষণ পূর্বে দেওয়া অনেকটা অসম্ভব মনে করা হচ্ছে।

ভারতে ডিজিটাল মনিটর নেই। তবে তারা স্থায়ী বগি সনাক্তকরণ সাইন ঝুলিয়ে রেখেছে। সেই বোর্ডে একাধিক ভাষায় বগির নাম লেখা থাকে। ট্রেনগুলো যথাস্থানে এসে দাঁড়িয়ে যাত্রী নিয়ে বিরামহীনভাবে ছুটে চলছে। বাংলাদেশের এই ব্যবস্থা অনেকখানি আধুনিক। ভারতীয়রা দেখলে হয়ত নিশ্চয় হিংসা করবে।

বিমানবন্দর ষ্টেশনের রেল লাইনে পড়ে রয়েছে ময়লা, ছবি: বার্তা২৪.কম

নতুন এ পদ্ধতি সংশোধনী যাত্রীদের দুর্ভোগ নির্মূল করতে পারে। মনিটরে বগির নাম সার্বক্ষণিক দৃশ্যমান থাকবে, শুধু ট্রেনের নামে বদলে যাবে। এতে দুই দিক থেকে সুবিধাজনক। একদিকে যাত্রীরা অভ্যস্ত হয়ে পড়বে, অন্যদিকে লোকোমাস্টাররাও (চালক) অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।

এদিকে ভিড় ঠেলে কোচের কামরায় উঠতে রীতিমত যুদ্ধ করতে হলো। আর মহিলাদের দুর্ভোগ অভাবনীয়। অথচ দুটি দরজা খুলে দিলে এই যন্ত্রণা দূর করা সম্ভব। তবে ট্রেন কর্তৃপক্ষের দাবি দুটি দরজা খোলা থাকলে স্ট্যান্ডিং যাত্রীরা এসি বগিতে প্রবেশ করে ফেলে। পরে তাদের সেখান থেকে সরানো যায় না।

বিমানবন্দর স্টেশনের অবাধে ধূমপান ও লাইনের উপর ছড়িয়ে থাকা ময়লা হতাশ করলো। এদিক থেকে কমলাপুরকে অনেকটা ভালো বলতে হবে। সেখানে ধূমপানও কম আবার লাইনও অনেকটা পরিচ্ছন্ন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর