দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজনৈতিক অঙ্গীকার পেয়েছি: টিআইবি

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 04:52:32

দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজনৈতিক অঙ্গীকার পেয়েছি।

তিনি বলেন, চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা থাকতে হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না এবং ঘর থেকে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে হবে। এই বক্তব্যের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধের প্রাথমিক শর্ত হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গীকার আমরা পেয়েছি। এটি আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং দেশবাসীকে তুমুলভাবে আন্দোলিত করেছে। এই কারণে আমরা মনে করি দেশবাসী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সুফল দেখতে চায়।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই উন্নয়ন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে একসাথে’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে সংসদ ভবনের সামনে দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে টিআইবি আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে যেসব অঙ্গীকার সেসব প্রধানমন্ত্রী একাই বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকসহ যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে তারা যেনো দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানের নাম পরিচয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে নির্মোহভাবে তৎপর থাকে এবং জনগণ যেনো দুর্নীতি প্রতিরোধের সুফল ভোগ করতে পারে।

এছাড়া মানববন্ধনে দুর্নীতি প্রতিরোধে টিআইবির পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো: চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বাস্তব সুফল নিশ্চিতে কোন প্রকার ভয় বা করুণার ঊর্ধ্বে থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না’ এই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে, অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই অভীষ্ট অর্জনে সকল অভীষ্টের কার্যকর বাস্তবায়নের পূর্বশর্ত হিসেবে অভীষ্ট ১৬ এর ওপর সর্বাধিক প্রাধান্য নিশ্চিত করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংগঠনসমূহ যাতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে পারে, তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, সকল নাগরিকের বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ ও 'ফরেন ডোনেশন রেগুলেশন অ্যাক্ট' এর নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিল করতে হবে, সরকারিখাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে 'সরকারি চাকরি আইন ২০১৮' এর বিতর্কিত ধারা সমূহ বাতিল করতে হবে, ঋণ খেলাপিতে জর্জরিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও জালিয়াতি এবং বেসরকারি ব্যাংকের নজিরবিহীন আর্থিক কেলেঙ্কারির সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাবনা প্রণয়নের জন্য নিরপেক্ষ, যথাযথ যোগ্যতাসম্পন্ন, নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব মুক্ত বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠন করতে হবে, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পেশাদারি উৎকর্ষ ও কার্যকরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমন্বিত ও পরিপূরক কৌশল গ্রহণ করতে হবে; এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ও সদস্যদের নিয়োগে যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর কার্যকর প্রয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে তথ্যের আবেদনকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ আইন- ২০১১ বাস্তবায়নের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই আইন সম্পর্কে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর বিভিন্ন কর্মসূচি নিতে হবে ও দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদককে শক্তিশালী করতে কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটির ওপর সকল প্রকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সরকারি ও রাজনৈতিক প্রভাব বন্ধ করতে হবে।

অন্যদিকে দুদকে নেতৃত্ব পর্যায়ে অকুতোভয় সৎসাহস, দৃঢ়তা ও নিরপেক্ষতার মাধ্যমে এর ওপর অর্পিত আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনে দৃষ্টান্তমূলক কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এই মানববন্ধনে টিআইবির সহযোগী সংগঠন সনাক, স্বজন, ইয়েস ও ইয়েস গ্রুপের সদস্যরা অংশগ্রহণ করে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর