'ফাঁকা থাকে না সোনার বাংলা, সেবা নিয়ে খুশি যাত্রীরা'

ঢাকা, জাতীয়

সোনার বাংলা এক্সপ্রেস থেকে তৌফিকুল ইসলাম, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 10:52:40

ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একমাত্র বিরতিহীন ট্রেন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। মাত্র সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে পৌঁছানোর জন্য এ রুটের যাত্রীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ট্রেনটি। বর্তমানে ট্রেনটিতে খালি থাকে না কোন আসন। শোভন চেয়ার থেকে শুরু করে এসি চেয়ার সকল আসনই বিক্রি হয়ে যায় অতি দ্রুত।

কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই প্রতিনিয়ত নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যায় এবং কাঙ্ক্ষিত সময়ে পৌঁছানোর কারণে চট্টগ্রাম রুটের যাত্রীদের প্রথম পছন্দ সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। সবসময় যাত্রী চাপ বেশি থাকার ফলে আগে থেকে টিকিট কেটে না রাখলে টিকিট পাওয়া যায় না ট্রেনটির।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কমলাপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সোনার বাংলা এক্সপ্রেস সরেজমিনে ঘুরে এ তথ্য জানা যায়। ভোর গড়িয়ে সকাল হওয়ার সাথে সাথেই যাত্রীরা পরিবার নিয়ে ছুটছেন ট্রেনের দিকে।

সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের নিদিষ্ট বগিতে উঠছেন যাত্রীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ঘুরে দেখা যায়, ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা লাল, সবুজ এবং সাদা রংয়ের বগি যাত্রীতে ভরে গেছে। বগির ইন্টেরিয়র ডিজাইন বেশ ভালো। প্রত্যেকটি বগিই বেশ ছিমছাম, গোছানো ও পরিষ্কার। দুই পাশে দুটো করে আসন মাঝখানে চলাফেরা করার জন্য ফাঁকা জায়গা। এছাড়া ট্রেনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত বায়ো টয়লেট।

সোনার বাংলা ট্রেনের দায়িত্বরত এটেনডেন্টরা যাত্রীদের দিচ্ছেন তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা। প্রয়োজনে যাত্রীকে তার সিটে বসিয়ে দিয়ে আসছেন তারা। সোনার বাংলা ট্রেনের একজন এটেনডেন্টন বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'আমরা সবসময়ই যাত্রীদের ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। এছাড়া এখন রেল সেবা সপ্তাহ চলছে। তাই আমরা চেষ্টা করছি যাত্রীদের আরো ভালো ট্রেন সার্ভিস দেওয়ার।'

যাত্রীদের সেবায় কাজ করছেন এটেনডেন্টরা , ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাওয়া রায়হান হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'পরিবার নিয়ে নিরাপদ ভ্রমণের অন্যতম মাধ্যম হলো ট্রেন। সড়কপথে যেতেও অনেক সময় লাগে এবং অন্যান্য ট্রেনে চট্টগ্রাম যেতে সময় লাগে প্রায় সাত ঘণ্টা লাগে। সে দিক থেকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস এগিয়ে আছে। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার ভিতরে চট্টগ্রামের পৌঁছাতে পারি। ট্রেনে বাড়তি যাত্রীর ঝামেলা নেই, শুধুমাত্র টিকিটের যাত্রীরা উঠেন। তাই ট্রেনটির সার্ভিসটা বেশ ভালো।'

বাচ্চাদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটি কাটাতে যাওয়া চট্টগ্রামগামী আরেক যাত্রী শারমিন নীরা বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ট্রেনটি চালু হওয়ার পর থেকে বরাবরই আমার খুব পছন্দ সোনার বাংলার সার্ভিস। বিশেষ করে খুব কম সময়ে পৌঁছানো যায় ট্রেনটি দিয়ে। বিরতিহীনভাবে চলার কারণেই ট্রেনটি আমাদের কাছে ভালো লাগে।'

সোনার বাংলা এক্সপ্রেস এর সেবা নিয়ে জানতে চাইলে হামিদুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ব্যবসার কারণে সপ্তাহে অনেক দিনই যেতে হয় চট্টগ্রাম। সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সার্ভিসটা ভালো। এই ধরনের ট্রেন আরো আরো বাড়ানো উচিত। ভালো ট্রেন সেবা দিলেই এমনিতেই যাত্রী বাড়বে।'

ছিমছাম, গোছানো ও পরিষ্কার সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা যায়, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল সাতটায় ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। আর চট্টগ্রাম পৌঁছায় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। আবার চট্টগ্রাম থেকে বিকেল পাঁচটায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছায় রাত ১০টা ৪০ মিনিটে।

ট্রেনটির যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৭৪৬ জন। এর মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) মোট আসন ২২০টি, শোভন চেয়ারের মোট আসন ৪২০টি, এসি বার্থের (শুয়ে যাওয়ার) আসন রয়েছে ৬৬টি। এছাড়া দুটি খাবার গাড়িতে মোট ৪০টি শোভন চেয়ার রয়েছে। যা প্রয়োজনে যাত্রী পরিবহনেও ব্যবহার করা হয়।

সোনার বাংলায় যাত্রীদের নূন্যতম ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০ টাকা। এছাড়া এসি চেয়ার ভ্রমণকারীদের গুনতে হবে ১০০০ টাকা এবং এসি বার্থে সিট প্রতি গুনতে হবে ১১০০ টাকা করে।

চট্টগ্রাম রুটে সোনার বাংলা সহ মোট ৫টি আধুনিক ট্রেন চলাচল করে। সেগুলো হলো মহানগর প্রভাতী, সুবর্ণ, চট্টলা এক্সপ্রেস এবং তূর্ণা-নিশীথা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর