উগ্রবাদ নির্মূলে সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে

উগ্রবাদী হয়ে কেউ জন্ম নেয় না। পরিস্থিতি তাদের বিপথগামী করে তোলে। উগ্রবাদ দমনে সবার আগে সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলন-২০১৯ এর উদ্বোধন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি। রাজধানীতে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে যৌথভাবে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি), ইউএসএইড এবং জাতিসংঘ।

ড. শিরীন শারমিন বলেন, প্রথমবারের মতো উগ্রবাদ বিরোধী এই সম্মেলন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বার্তাটি সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। উগ্রবাদ বিশ্বে কোথাও গ্রহণযোগ্য নয়। উগ্রবাদ সারা বিশ্বে হুমকি হিসেবে চিহ্নিত। সে জন্য জাতিসংঘ থেকে একটি কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কোনো মানুষ উগ্রবাদী হিসেবে জন্ম নেয় না। কী কারণে তারা এই পথে যাচ্ছে সেগুলোও আমাদের খুঁজে বের করে সমাধান করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। উগ্রবাদ দূর করতে হলে সর্ব প্রথম দারিদ্র্য দূর করতে হবে। পাশাপাশি সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে। সেজন্য ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, সমন্বয়ের মাধ্যমে উগ্রবাদ বিরোধী কাজ করার প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়নি। এই সম্মেলনের মাধ্যমে তা শুরু হলো। আলোচনার মাধ্যমে উগ্রবাদ দমন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই আইনগত ব্যবস্থার মাধ্যমে পুনর্বাসন কার্যক্রম চালিয়ে বিপথগামীদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বলেন, উগ্রবাদ শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই হুমকি। উগ্রবাদ নির্মূলে নারীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। তাদের হাত ধরেই এই সংকট সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। আন্তর্জাতিক অংশীজনদের উগ্রবাদ বিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেন, তিন বছর আগে উগ্রবাদ এ দেশে মাথাচারা দিয়েছিলো। পরবর্তীতে সবার সম্মিলিত চেষ্টায় সেই পরিস্থিতির উত্তরণ হয়েছে। তবে উগ্রবাদ বিরোধী এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়া উগ্রবাদ দমন করা সম্ভব না বলেও জানান তিনি।

উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলনের বিশেষ অতিথি মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার উগ্রবাদ প্রতিরোধে ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে। উগ্রবাদ দমনে ইতোমধ্যেই ৩৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রস্তুত রয়েছে।