রেল মেরামত ও যন্ত্রাংশ তৈরির কাজে নারীরা

চট্টগ্রাম, জাতীয়

তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পাহাড়তলী রেল কারখানা থেকে | 2023-08-23 01:28:18

চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন শপ ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কারখানাটিতে ছোট থেকে বড় সব ধরনের রেলের মেরামত ও যন্ত্রাংশ তৈরিতে পুরুষের সঙ্গে সমানতালে কাজ করছেন নারীরা।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন কারখানায় ঘুরে দেখা যায়, নারী শ্রমিকরা দক্ষ হাতে বড় বড় মেশিন চালিয়ে রেলের মেরামত কাজ করছেন। কারখানাটিতে সব সেক্টর মিলিয়ে ১২১ জন নারী শ্রমিক কাজ করেন।

নারীদের কাউকে দেখা গেছে রেল কোচের পেইন্টিংয়ের কাজে। কেউবা আবার বড় লেদ মেশিন চালিয়ে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি করছেন। কেউ কেউ ড্রিল মেশিন হাতে কোচের ইন্টেরিয়রের কাজ করছেন। পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন শপজুড়ে এভাবেই নারীদের শক্ত হাতে কাজ করার দৃশ্য চোখে পড়ে।

পাঁচ বছর ধরে রেল কারখানাটিতে কাজ করা এক নারী কর্মী বার্তা২৪.কমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে এখন অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে। এখন আমার অধীনে অনেক নারী কাজ করেন। এখানে কাজ করে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে।

পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন শপে কাজ করছেন নারীরা

ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা ভালো যাত্রীসেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছি। রেল গাড়ির কিছু নষ্ট হলে আমাদের কাছে আনা হয় মেরামত করাতে। যাত্রীদের অনুরোধ করব রাষ্ট্রীয় সম্পদ রেলকে রক্ষা করবেন, রেলের কোন কিছু নষ্ট করবেন না।

রেল কারখানার শ্রমিক সাদিয়া আফরিন বলেন, নিজের ইচ্ছায় এ পেশায় এসেছি। এসএসসি পড়ার সময়ই স্বপ্ন ছিল রেল কারখানায় কাজ করব। কঠিন এই কাজ করতে আমার মোটেই খারাপ লাগে না।

পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন শপে কাজ করছেন এক নারী

অন্যান্য নারীদেরও রেল কারাখানার আসতে উদ্বুদ্ধ করে সাদিয়া বলেন, মানুষ চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে। পরিশ্রমের কাজে এক ধরনের ভালোলাগা আছে। আমি অন্য নারীদের অনুরোধ করব—আপনারা এই ধরনের পেশায় বেশি করে আসেন।

রেলের ডামি প্লাগ বানানোর কাজ করেন ফাতিহা হোসেন। তিনি বলেন, চার বছর ট্রেনিং নেওয়ার পরে তারপরে আমাদের এই কাজে পোস্টিং দেওয়া হয়। আমি ডামি প্লাগ তৈরি করি। রেলের ব্রেকের কাজ করে এই প্লাগ।

কারখানায় নারী কর্মীদের সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন শপের ওয়ার্কার্স ম্যানেজার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, নারীরা আগে কাজ করত না, বসে বসে টাকা নিত। কারখানায় লোকবল কম থাকায় সব নারী কর্মী এখন কাজ করছেন। এক সময় নারীদের কাজের পরিবেশও ছিল না। আমরা কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছি। এখন সুন্দর পরিবেশে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সব ধরনের কাজ করছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর