ডেনমার্ক সরকার জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে বাড়তি ১৬০ লাখ ড্যানিশ ক্রনর বা সাড়ে ২৩ লাখ ইউএস ডলার দিয়েছে, যাতে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণের জরুরি খাদ্য চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন বলেন, এ মানবিক সংকটের সময় উদারতার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে ডেনমার্ক। ডেনমার্ক এটাও উপলব্ধি করেছে যে স্থানীয় জনগণ ভীষণ চাপের মুখে রয়েছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বাংলাদেশ সরকার, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগণের প্রতি ডেনমার্ক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি আরো বলেন, ডব্লিউএফপি এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে বিরূপ পরিবেশে যেসব উদ্যোগের মাধ্যমে অপরিহার্য খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির প্রতিনিধি রিচার্ড রেগান বলেন, কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া প্রায় নয় লাখ শরণার্থীর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ সম্পূর্ণভাবে ডব্লিউএফপির খাদ্য সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল। ড্যানিশ সরকারের এ সময়োপযোগী অনুদান অরক্ষিত শিশু ও নারীদের খাদ্য যোগানে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এ অনুদান জীবিকাসংক্রান্ত প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করা হবে, অর্থাৎ নগদ অর্থ ও অর্থনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার মাধ্যমে যেন তারা নিজের ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারে, সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।
২০১৭ সালের আগস্টে যখন সহিংসতা এড়াতে ৭ লাখ পয়তাল্লিশ হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে, সেই থেকে কক্সবাজারকে কেন্দ্র করে ডব্লিউএফপি এশিয়ার ভিতরে অন্যতম বৃহৎ একটি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। নতুন শরণার্থীরা আগে থেকেই কক্সবাজারে বসবাসরত দুই লক্ষ শরণার্থীদের সাথে মিলিত হয়ে একসাথে বসবাস করছে।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ড্যানিশ সরকারের মোট অনুদানের পরিমান ৩৩৮ মিলিয়ন ড্যানিশ ক্রনর (প্রায় ৫২ মিলিয়ন ইউএস ডলার) এবং রোহিঙ্গাদের এই মানবিক সঙ্কটের সময় যারা সর্বপ্রথম ডব্লিউএফপি-কে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে ড্যানিশ সরকার তাদের মধ্যে অন্যতম। ডেনমার্কের এই গুরুত্বপূর্ণ অনুদানের মাধ্যমে ডব্লিউএফপি অপুষ্টিজনিত জরুরী চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক নানাধরনের প্রকল্প, জীবনরক্ষাকারী খাদ্য সহযোগিতা, এবং ক্যাম্পের স্কুলে শিশুদেরকে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত বিশেষ পুষ্টিসম্পন্ন বিস্কুট প্রদান ইত্যাদি নানাধরনের জরুরী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সক্ষম হয়েছে।
জরুরি অবস্থায় জীবনরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে জীবনধারার পরিবর্তনে কাজ করে থাকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। ডব্লিউএফপি বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে কর্মরত রয়েছে । সেসব দেশে সংঘাত ও দুর্যোগ আক্রান্ত মানুষকে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি তাদের উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করে এই সংস্থা।