‘প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়ন পর্যালোচনা জরুরি’

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 11:50:06

বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি যা হচ্ছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে কিনা তা পর্যালোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো- অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) এর পরিচালক এবং বিশেষ উপদেষ্টা ম্যারিও পিজ্জিনী।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) লেকসোর হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এর বার্ষিক আলোচনা-২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এর প্রতিপাদ্য বিশ্ব বিকাশের ওপর দৃষ্টিভঙ্গি বিষয়ে উন্নয়ন কৌশল পুনর্বিবেচনা।

ম্যারিও বলেন, বর্তমানে প্রবৃদ্ধি দিয়ে উন্নয়ন মাপা হলেও কর্মসংস্থানের বড় একটি অংশ এখনও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে রয়েছে। এর ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে এদের অনেক ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। তাই এসব মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বা পেনশনের ব্যবস্থা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এ বিষয়ের ওপর তিন ধরনের মাপকাঠি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কি ধরনের আছে তা জানতে হবে, কোনো দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উৎপাদনশীলতা, আয় ও মজুরি কতটা বেড়েছে তা পর্যালোচনা করা জরুরি এবং মানুষের সার্বিক উন্নয়নে সরকারি সেবার মান কতটা বেড়েছে তা জানতে হবে।

ওইসিডির পরিচালক বলেন, যে সব উন্নত দেশে উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে কিন্তু সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি না পাওয়া ও সরকারি সেবার মান ভালো না থাকার কারণে বিভিন্ন অশান্তি প্রকাশ পাচ্ছে। এই ধরনের অশান্তি যেনো ভবিষ্যতে দেশে দেশে বৃদ্ধি না পায় তার জন্য বিশ্বব্যাপী যৌথ চিন্তার দরকার।

তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন সংস্থাগুলো বা দাতা দেশগুলোর উন্নয়ন সহযোগিতা এখন পাল্টে যাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রেও চিন্তা করা জরুরি। পূর্বে শুধু উন্নয়নের ভরকেন্দ্র বা উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে ইউরোপ-আমেরিকা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতো কিন্তু তাদের পাশাপাশি বর্তমানে যুক্ত হয়েছে চীন, জাপান, ভারতসহ আরও বেশ কিছু দেশ। তাই বৈদেশিক সাহায্যের পাশাপাশি এফডিআইকেও বৈদেশিক সাহায্যের অংশ হিসেবে বিবেচনা করার সময় এসেছে।

ম্যারিও পিজ্জিনি বলেন, ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী যে আর্থিক মন্দা তৈরি হয়েছিল তার কারণেই অভিবাসন, সামাজিক অসন্তোষ বেড়েছে। এ সকল সমস্যা নিরসনে নতুন শিল্পনীতি প্রয়োজন।

নীতিনির্ধারকরা উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয় রাষ্ট্রনায়কদের কী বুঝাতে পারছে না! নাকি তারা তা গ্রহণ করছে না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে নতুন ধরনের রাজনৈতিক আলোচনা প্রয়োজন। সামাজিক কাঠামোগত যেসব পরিবর্তন হচ্ছে তার সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনার সংযোগ দরকার। বর্তমানে এসবের মধ্যে যোগসূত্র নেই। পরিবর্তনগুলোকে নতুন রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করে রাজনীতিবিদদের চিন্তা করা প্রয়োজন।

এছাড়া প্রবৃদ্ধিমুখী উন্নয়নের ধারা থেকে বেরিয়ে এসে কাঠামোগত পরিবর্তনের উন্নয়ন করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা আক্তার খাতুন, সিপিডির বিশেষ ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের মেম্বার মিস্টার এম সাইদুজ্জামান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর