হেমন্তকে বিদায় দিয়ে আনুষ্ঠানিক সূচনা হলো শীতের। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলা মাস পৌষের প্রথম দিন। শীতের শুরুতেই কুয়াশা তার চাদর বিছিয়ে ঢেকে রাখে চারপাশ। রাতভর ঝরে পড়া শিশিরে ভিজে ওঠে ঘাস, লতাপাতা, ঘরবাড়ির টিনের ছাউনি। ঘাসের ডগায়, পাতার কিনারে জমে থাকা স্বচ্ছ শিশির বিন্দুতে ভোরের সোনালি রোদের স্পর্শ চারদিকে দ্যুতি ছড়ায়।
পঞ্জিকার হিসেবে সোমবার শীতের শুরু হলেও কদিন ধরেই উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হিমেল হাওয়া বইছে। বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখিরা। ফুটতে শুরু করেছে বহু ধরনের বাহারি ফুল। মাঠের পর মাঠ শীতকালীন ফসলে সবুজ হয়ে উঠেছে। গ্রাম-বাংলা মেতেছে বাহারি স্বাদের পিঠা উৎসবে।
তবে রাজধানীতে এর কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। রাতে হালকা শীতের প্রভাব থাকলেও দিনের বেলায় তা অনুভূত হচ্ছে না। বিভিন্ন সড়কে উন্নয়নের কাজ চলায় বাতাসে উড়ছে ধুলাবালি। কংক্রিটের শহরে থাকা সবুজ ঘাস ও গাছপালাতে শিশিরের বদলে চোখে পড়ে ধুলাবালির আবরণ। বায়ুদূষণে ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানীবাসী।
সোমবার (১৬) মহান বিজয় দিবসের সকালে দেখা মেলেনি সূর্যের। দুপুরের দিকেও সূর্যের দেখা খুব একটা দেখা যায়নি। চারপাশ কুয়াশাচ্ছন্ন মনে হলেও নেই শীতের হিমেল হাওয়া।
আবহাওয়াবিদ হাসিবুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে জানান, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে। এতে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে। ১৮ ডিসেম্বরের পর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর চার-পাঁচদিন পর আবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কক্সবাজারে ২৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারে ৩০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের কয়েকদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।