নগরীতে ধুলাবালির বর্তমান অবস্থায় উদ্বিগ্ন এলজিআরডি মন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-16 04:37:53

ঢাকা নগরীতে ধুলাবালির বর্তমান অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, ‘নগরীতে ধুলাবালির বর্তমান অবস্থায় আমরা উদ্বিগ্ন। বিশ্বের সব দেশেই কনস্ট্রাকশন কাজ হয়, কিন্তু বাংলাদেশের মতো এমন অবস্থা থাকে না। সবাইকে সচেতন হতে হবে। ধুলাবালি পরিষ্কার করার জন্য আধুনিক গাড়ি কিনতে সিটি করপোরেশনকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সহযোগিতা করবে মন্ত্রণালয়।’

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ধুলাবালিমুক্ত পরিচ্ছন্ন মহানগরী নিশ্চিত করার বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এ সময় পরিবেশ দূষণ রোধে বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ ও করণীয় নির্ধারণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে একটি কমিটি করার নির্দেশ দেন এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটির প্রতিনিধিরা থাকবেন এ কমিটিতে। একই সঙ্গে বন ও পরিবেশের যুগ্মসচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, রাজউকের প্রতিনিধি, সড়ক ও মহাসড়ক অধিদফতরের প্রতিনিধি এবং ওয়াসার প্রতিনিধিদের নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হবে।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘কমিটি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটির পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য যে সমস্ত লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার হবে, তা যাচাই বাছাই করবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের থেকে যে সমস্ত দেশ এগিয়ে আছে, তারা কাজগুলো কী কী পদ্ধতিতে করেছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দেবে। যা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধুলাবালির বাইরে জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যা আছে। এটা আর চলতে দেওয়া যায় না। আমরা উন্নত দেশ হতে যাচ্ছি। অনেক বিদেশি আসছে তারা আমাদের সম্পর্কে খারাপ ইম্প্রেশন নিয়ে যায়। এছাড়া বায়ু দূষণের কারণে অনেক অসুখ বিসুখও হচ্ছে।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘শহরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। ময়লা ও ধুলাবালি পরিষ্কারের দায়িত্বও তাদের। ধুলাবালি পরিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে পানি ছিটানো অব্যাহত রাখতে হবে। এছাড়া রাজউক যেসকল বিল্ডিং করছে, সেখান থেকে যাতে ধুলাবালি উৎপন্ন না হয় এর জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে সড়ক মহাসড়কের অধীনে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব, সেখানে যাতে ধুলাবালি তৈরি না হয়। পরিবেশ অধিদফতরকে বলব, এখানে যে সমস্ত ইস্যুগুলো আসছে সেগুলো তারা নোট করবেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।’

এ সময় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের ৪ হাজার ক্লিনার আছে। ধুলা পরিষ্কার করার মেকানাইজ পদ্ধতি নাই। ম্যানুয়ালি ধুলাবালি পরিষ্কার করা সম্ভব নয়।’

উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি আবুল কাশেম বলেন, ‘সকালে ম্যানুয়ালি ধুলা পরিষ্কার করা হয়। ড্রেন পরিষ্কারে ড্রেন অ্যান্ড সাকার মেশিন কিনেছি। একটা সুইপিং ট্রাক আছে। আরেকটা আসছে। আরও ছয়টি কেনার উদ্যোগ আছে।’

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের ৮০০ সুইপার আছে, আমরা মাঝেমধ্যে পানি ছিটাই। সুইপার দিয়ে ধুলাবালি পরিষ্কার সম্ভব না। রাস্তা সুইপ করার জন্য এবং ড্রেন পরিষ্কারের জন্য আধুনিক মেশিন দরকার। নারায়ণগঞ্জে সারাদিনই ট্রাক ঢুকে। এটা দিনের বেলা বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘উত্তরা থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত রোড অ্যান্ড হাইওয়ে কাজ করছে এটা বড় সমস্যা এখন। রাস্তার পাশে ময়লা। আমাদের ১০টা গাড়ি। ১০০-১৫০ পরিচ্ছন্নতা কর্মী মাত্র। ৩ হাজার ২০০ এর মতো ইন্ডাস্ট্রি আছে। ১০ জানুয়ারি থেকে বিশ্ব ইজতেমা শুরু। পানি ছিটানোসহ ময়লা আবর্জনা না সরাতে পারলে সবাই সাফার করবে। রাস্তার ওপর ল্যাম্পপোস্ট ও বিদ্যুতের খুঁটি না সরালে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।’

পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি বলেন, ‘নভেম্বরেই বিভিন্ন সংস্থাকে কী করণীয় তা জানাই। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এক মাসের কম সময়ে ৩২৭টি ইটভাটা বন্ধ হয়েছে। ১২৭টি অভিযান চালানো হয়েছে।’

এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘আমি একজন নাগরিক হিসেবে উদ্বিগ্ন। সমাধানের জায়গায় আসতে হবে। অনেক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এবার আমরা টেকসই উন্নয়নে পদক্ষেপ নিতে চাই। শুধু আপদকালীন পদক্ষেপ নয়। কাজের ক্ষেত্রে আমাদের আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর