গ্রামীণফোন নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে টেলিনরের চিঠি

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 09:01:32

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোনের অধিকাংশ শেয়ারের মালিক টেলিনর রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠিয়েছে। উকিলের মাধ্যমে এই চিঠি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে পাঠিয়েছে টেলিনর।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

তিনি বলেন, টেলিনর এই নোটিশে ১২ হাজার কোটি টাকা পাওনার বিষয়টি নিয়ে সালিস (আরবিট্রেশন) চেয়েছে। নইলে টেলিনর আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবে বলেও জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে উকিল নোটিশ দেওয়া হয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত তা অবহিত করা আছে এবং ফরেন মিনিস্ট্রিসহ সবাই এই বিষয়টি জানে। এ নিয়ে আইনজ্ঞদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি।

এই উকিল নোটিশটি নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কোনো কারণ নেই। তার কারণটা হচ্ছে, তারা চাচ্ছে আরবিট্রেশন যেন করা হয়। আরবিট্রেশন করার জায়গা দিয়ে তো আমরা উন্মুক্ত হয়েই আছি। কিন্তু বাংলাদেশের আদালতে মামলা থাকলে আমার তো আদালতের বাইরে আরবিট্রেশন করার কোনো সুযোগ নেই। আমার আদালত যদি আমাকে আরবিট্রেশন করার জন্য হুকুম দেন, আমি আরবিট্রেশন করতে পারব।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর দিলকুশায় জীবন বিমা টাওয়ারের (১৫ তালা) সিএম‌জেএফ’র অফিস ও ওয়েবসাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসির) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেন বলেন, বিটিআরসি ও গ্রামীণফোনের দ্বন্দ্বের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা, ইউনাইটেড পাওয়ার এবং বেটবিসি কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে।

বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করায় দেশি বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করছে। অতিরিক্ত শেয়ার বিক্রির ফলে দরপতন হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে সূচক কমেছে ৩৬৪ পয়েন্ট। তার মধ্যে ৫ কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ২৮০ পয়েন্ট বলে মনে করেন তিনি। 

উল্লেখ্য চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারির পর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত দরপতনের ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বিনিয়োগকারীদের পুঁজি উধাও হয়েছে ৮৩ হাজার কোটি টাকা।

গত ২৪ নভেম্বর মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোনকে আপাতত দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় গ্রামীণফোনের কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি করা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার ওপর হাইকোর্টের জারি করা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়ে যাবে বলেও সতর্ক করেন আদালত।

প্রায় ২৭টি খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি (বিটিআরসির ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি ও এনবিআরের ৪ হাজার ৮৬ কোটি) টাকা পাওনা হিসেবে দাবি করে গ্রামীণফোন লিমিটেডকে গত ২ এপ্রিল চিঠি দেয় বিটিআরসি। ওই পাওনা দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে গ্রামীণফোন নিম্ন আদালতে একটি মামলা করে ও পাওনা দাবির অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চায়। গত ২৮ আগস্ট ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর বিরুদ্ধে গ্রামীণফোনের পক্ষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। এর গ্রহণযোগ্যতার শুনানি নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন এবং ওই অর্থ আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আবেদন করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আসে। আপিল বিভাগ শুনানিতে বিটিআরসির পাওনা দাবির প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন এখন কত টাকা দিতে পারবে, তা জানতে চেয়েছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর