মরিচের ফলন বিপর্যয়, বাজারে আগুন

, জাতীয়

কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 21:13:34

মেহেরপুর: জেলায় চলতি বছর মরিচের ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। মরিচ গাছের নতুন পাতা কুঁকড়ে যাওয়ায় ফুল ও ফল দাঁড়াচ্ছে না। ফলে ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত মরিচ পাচ্ছে না চাষিরা। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে মরিচ বাজারে।

জানা গেছে, মেহেরপুর অঞ্চলে চৈত্র মাসে মরিচ চারা রোপণ করা হয়। এরপর আষাঢ় মাসে পুরোপুরি মরিচ তোলা শুরু হয়। তবে এবার আষাঢ় মাস শেষ হতে চললেও চাষির ক্ষেত থেকে মরিচ তোলা যাচ্ছে না। বিঘায় ৫-১০ কেজি করে মরিচ তোলা যাচ্ছে। এ মৌসুমে জেলার তিনটি উপজেলায় ৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদ করা হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

পূর্বমালসাদহ গ্রামের চাষি আব্দুল মালেক জানান, এবার তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ‘মাগুরা’ জাতের মরিচ আবাদ করেছেন। ভালো ফলনের আশায় পর্যাপ্ত পরিচর্যাও করছেন। পূর্ণাঙ্গ ফলন আসার জন্য মরিচ গাছ যতটুকু লম্বা ও কুশি মেলা দরকার তার সবই রয়েছে। কিন্তু ডগার নতুন পাতা কুঁকড়ে জট পাকিয়ে যাচ্ছে। এতে ফুল দাঁড়াচ্ছে না। মাঝে মাঝে কয়েক কেজি করে মরিচ তোলা যাচ্ছে। এবারের মরিচ আবাদে লোকসানের আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

চাষি সূত্রে জানা গেছে, মরিচ ক্ষেতে বিভিন্ন কীটনাশক কোম্পানির প্রতিনিধির আনাগোনা রয়েছে। তারা চাষিদের প্রেসক্রিপশন করছেন স্ব স্ব কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহারের জন্য। চাষিরাও হাঁটছে সেই পথে। বিভিন্ন ধরনের বিষ প্রয়োগ করেও মরিচ গাছ স্বাভাবিক হচ্ছে না। এতে লাভের পরিবর্তে চাষের খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে।

এদিকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বিধায় মরিচ গাছের সমস্যা থেকেই যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি জানান, পাতা কুঁকড়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে এক ধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাকড়সা (জাব পোকার চেয়েও ছোট) আক্রমণ করেছে। যাকে মাইটস আক্রমণ বলা হয়। এই পোকা কচি পাতার রস চুষে খাচ্ছে। ফলে পাতা দুর্বল হয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে। নোইন, থিয়োভিট, ভার্টিমেক্স ও ওমাইট জাতীয় মাকড় নাশক প্রয়োগ করলে ভালো হবে। কীটনাশক প্রয়োগ করলে এর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি চাষিদের আহ্বান জানান।

এদিকে ভরা মৌসুমে বাজারে মরিচের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পাইকার বাজারে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা থেকে ১০৫ টাকা। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি।

মেহেরপুরে মরিচের বড় পাইকার মার্কেট গাংনী কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী মহিবুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুমে মেহেরপুরসহ আশপাশের জেলায় মরিচ সরবরাহ করা হয়। এবার জেলায় পর্যাপ্ত মরিচ উৎপন্ন না হওয়া এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় বন্যার কারণে মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর