জেলা প্রশাসন ও চেম্বার অব কমার্সের অনুমতি ছাড়াই ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় চলছে মাসব্যাপী পল্লীশিল্প ও বাণিজ্য মেলা।
গত ১০ ডিসেম্বর থেকে উপজেলা সদরের মনিরামবাড়ি এলাকায় শুরু হওয়া এই মেলায় উচ্চ শব্দে বাজনা বাজানো ও পৌর এলাকায় মাইকিংয়ের শব্দে মানুষজন অতিষ্ঠ বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
জানা গেছে, স্থানীয় মনিরামপুর খেলার মাঠে ব্যাপক আলোকসজ্জা ও উচ্চ শব্দে বিভিন্ন হিন্দি গানের মাধ্যমে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয়। মেলায় দশ টাকার বিনিময়ে টিকেট কেটে ভেতরে প্রবেশ করতেই মিলবে একটি পানির ফোয়ারা ও সুউচ্চ একটি আলোক ঝলমলে ওয়াচ টাওয়ার। পুরো মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে রয়েছে প্রায় ৪০টি ছোট-বড় স্টল। এছাড়াও রয়েছে সার্কাস, ট্রেন, হোন্ডা গেম, নাগরদোলা, নৌকা, গেমজোন ও খাবারের দোকান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১০ডিসেম্বর মেলাটির উদ্বোধন করেছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ কে এম খালিদ। মেলার আয়োজনে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী লোকজন রয়েছে বিধায় মেলার আয়োজনের বৈধতা নিয়ে ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে মুক্তাগাছা পৌর এলাকার কেউ প্রকাশ্যে কথা বলে না।
অভিযোগ রয়েছে, বাণিজ্য মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের পাশাপাশি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও মনিরামবাড়ি মেলা কমিটি সেই নিয়ম মানেনি। তাই সরকারও বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব আয় থেকে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি শঙ্কর সাহা জানান, তারা এই অবৈধ মেলা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন।
জানা গেছে, মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল সরকার এই মেলাটির মূল আয়োজক। তার সাথে সহযোগিতায় রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারা। তবে এ বিষয়ে বিল্লাল সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, এ মেলার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। মেলার ধারের কাছেও যান না তিনি।
মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কোন অনুমোদন নেওয়া হয়নি স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা সরকার বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আর এদিকে জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, মেলা কমিটিকে মেলা বন্ধের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও নির্দেশ না মানা হলে তা অচিরেই উচ্ছেদ করা হবে।