কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা পরিদর্শন করেছেন রাজশাহীস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটি।
বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর মিয়াপাড়া অবস্থিত ঋত্বিকের শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের স্মৃতি বিজড়িত ভিটায় যান তিনি। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সেখানে ঘুরে দেখেন তিনি।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি ডা. এফএমএ জাহিদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি সাজ্জাদ বকুল এবং হোমিওপ্যাথিক কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আনিসুর রহমান প্রমুখ। ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার তাদের কাছে সবকিছু শোনেন।
তবে এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি সঞ্জীব কুমার ভাটি। তবে তার সঙ্গে থাকা রাজশাহীর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা দ্রুত হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে অন্যত্র সরিয়ে ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটাকে জাদুঘর এবং চলচ্চিত্র কেন্দ্র করার দাবি জানান।
তারা বলেন, এই বাড়ি থেকে ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়াশোনা করেছেন। কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নাট্যচর্চাও করেছেন এই বাড়িতে থেকে। সে সময় রাজশাহীতে ‘অভিধারা’ নামের একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন তিনি। ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটায় বর্তমানে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। তবে সেখানে ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি বিজড়িত কয়েকটি ঘর এখনও অক্ষত রয়েছে। তার পাশে একটি অংশ ভেঙে গড়ে তোলা হয়েছে আধুনিক ভবন।
অবশিষ্ট অংশও ভেঙে সম্প্রতি কলেজের সাইকেল গ্যারেজ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এরপরই প্রতিবাদ শুরু করেন রাজশাহীর সংস্কৃতিপ্রেমীরা। অবিলম্বে ভাঙার কাজ বন্ধের দাবি জানিয়ে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।
রাজশাহী এবং ঢাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। ওপর বাংলা থেকেও প্রতিবাদ আসতে থাকে। ১২ জন চলচ্চিত্র পরিচালক বিষয়টি নিয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
নির্দেশনা মোতাবেক বর্তমানে কাজ বন্ধ। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের কর্মকর্তারা জমিটির মাপজোখ করছেন। এরই মধ্যে ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা পরিদর্শনে গেলেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার।