রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) স্কুলের শিক্ষক দুরুল হুদা (৩৩)। ওই স্কুলেরই ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর বাসায় গিয়ে পড়াতেন তিনি। গত ১৬ অক্টোবর পড়ানোর সময় ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। ছাত্রীর চিৎকারে তার মা ঘটনাস্থলে আসেন। ততক্ষণে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ওই শিক্ষক।
পরে ২০ অক্টোবর ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা আকারে রেকর্ড করে পুলিশ। মামলা দায়েরের পরপরই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। আদালতের মাধ্যমে তাকে পরদিন পাঠানো হয় জেলে।
তবে গত ১৫ ডিসেম্বর জামিনে মুক্ত হয়ে ফের স্কুলে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন অভিযুক্ত শিক্ষক দুরুল হুদা। স্কুলে ওই শিক্ষকের যাতায়াত দেখে ভয়ে ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ভুক্তভোগী ছাত্রী। ছাত্রীর বাবা-মা বলছেন, স্কুলে অভিযুক্ত শিক্ষককে দেখে তাদের মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। সে অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
অপরদিকে, শ্লীলতাহানির মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষক দুরুল হুদা গত তিন দিন ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে নগরীর মতিহার থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন ছাত্রীর মা।
জিডিতে অভিযোগ করা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষক দুরুল হুদা ভাড়াটে লোকজন দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাদের হুমকি দিচ্ছেন। তারা অপরিচিত নম্বর থেকে প্রায়ই মোবাইলে কল করে গালিগালাজও করছেন। এ ঘটনায় তারা সপরিবারে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং তাদের মেয়ে ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, ভুক্তভোগী পরিবার ও স্কুলের অন্য শিক্ষকরা বলছেন- শ্লীলতাহানির ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ও নিপীড়ক শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে স্কুলের অধ্যক্ষ বলছেন- স্কুলটি যেহেতু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনস্থ, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনই কেবল এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে পারবে।
জানতে চাইলে রাবি স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মৌখিক নিষেধ থাকায় অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়নি। যেহেতু উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা তাই তার সিদ্ধান্ত অমান্য করা যাচ্ছে না।’
তবে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে মোবাইলে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।