রাজশাহীতে বেড়েছে সবধরনের এলপিজি গ্যাসের দাম। বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সিলিন্ডার প্রতি বেড়েছে ১৫০ টাকা। তবে বড় সিলিন্ডার গ্যাসের দাম এক লাফে বেড়েছে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। অন্য সিলিন্ডারের গ্যাসের দাম বেড়েছে পরিমাণ অনুযায়ী। ডিলার ও রিটেইলাররা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে।
গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে নাভিশ্বাস উঠেছে গ্রাহকদের। তারা বলছেন, কোনো ধরনের নিয়মনীতি ছাড়াই এইভাবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নৈমিত্তিক জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ডিলার ও রিটেইলারদের সাথে কথা বলা জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে রাজশাহীতে এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিলার ও রিটেইলাররা তা ২ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করেছেন।
ডিলার ও রিটেইলাররা জানান, বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে পাইকারিতে দাঁড়িয়েছে ১০৫০ টাকা। খুচরা তা বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। দোকানে ব্যবহৃত ৩৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ২৫০০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯০০ টাকা। খুচরা তা বিক্রি হচ্ছে ৩১০০ টাকায়।
আর বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত ছোট সাড়ে ৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০ টাকা। খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। আর ৪৫ কেজি ওজনের সিলিন্ডারের দাম ৩১০০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯০০ টাকা। বাজারে প্রায় ২০টির মতো কোম্পানি এলপিজি গ্যাস সরবরাহ করে। এসব কোম্পানি অনুযায়ীও আবার দামের ফারাক রয়েছে।
নগরীর রেলগেটে ওমেরা গ্যাসের ডিলার আনন্দকুমার সাহা জানান, 'আমরা বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস ৯৮০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রয় করছিলাম। দাম বৃদ্ধির ফলে আমাদের কিনতেই হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকায়। বিক্রয় করতে হচ্ছে ১১০০ টাকায়। আবার এই গ্যাস বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসতে হয়। সেখানেও একটা খরচ আছে। ফলে আমাদের লাভই থাকছে না। প্রতিবার দাম বৃদ্ধির পর আমাদের এই ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। গ্রাহকরাও বুঝতে চান না।'
তবে দাম বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্য আয়ের মানুষ। নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা ইদরিস আলী বলেন, 'আমি একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক। পরিবারে চারজন সদস্য। প্রতিমাসে একটা সিলিন্ডার প্রয়োজন হয়। সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধির সাথে দেখা যাবে অন্য জিনিসের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইভাবে যদি প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পায়, তাহলে আমাদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।'
নগরীর আলুপট্টির এনজিও কর্মী মারুফ আহমেদ বলেন, কয়েকদিন আগে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। যা এখনও বাজারে বিদ্যমান। সেখানে আবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। এই দাম বৃদ্ধির ফলে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে।