সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের দামি ঘড়ির সংগ্রহের ব্যাখ্যাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও অপর্যাপ্ত বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এছাড়া এসব ব্যাখ্যা বিবেচনা করে এসব সামগ্রী কেন যথানিয়মে ও যথাসময়ে রাষ্ট্রীয় তোশাখানায় জমা দেওয়া হলো না তা দেশবাসীকে জানতে চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
একইসাথে সংগৃহীত এ ধরনের উপহার কি ঘড়িতেই সীমাবদ্ধ, এরূপ সংগ্রহ কি শুধু সড়ক ও সেতু মন্ত্রীরই, নাকি এর বিস্তৃতি আরও ব্যাপক ও গভীর, তা খতিয়ে দেখে দেশবাসীকে জানানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের বিলাস বহুল ঘড়ির সংগ্রহ সম্পর্কে গতকাল (৯ জানুয়ারি ২০২০) সচিবালয়ে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে মাননীয় মন্ত্রী যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা প্রশ্নবিদ্ধ, ও পর্যাপ্ত নয়, বরং আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।
আরও পড়ুন: দামি ঘড়ি-পোশাক সবই উপহার: কাদের
যেভাবেই তিনি উপহারসমূহ পেয়ে থাকুন না কেন, ২০১২ সালের জুনে হালনাগাদকৃত তোশাখানা বিধি ১৯৭৪ অনুযায়ী উপহারসমূহ যথাসময়ে তোশাখানায় জমা দেওয়া হলো না কেন; জমা না দেবার সিদ্ধান্ত যেহেতু তিনি নিয়েছেন সেহেতু সংশ্লিষ্ট ধারা অনুসরণ করে উপহার প্রাপ্তবস্তুর প্রকৃত মূল্য অনুযায়ী অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে কি না, এ ধরনের প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর জানার অধিকার জনগণের রয়েছে।
সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক অবস্থানে থেকে তিনি কি অন্যদের স্থাপিত দৃষ্টান্ত অনুসরণ করলেন, নাকি অন্যদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করলেন? এরূপ প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়া অমূলক নয় বলে মন্তব্য করেন ড. জামান।
তিনি আরও বলেন,গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য মতে মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন যে, ঠিকাদারগণ নির্বাচনের সময় “একটা এমাউন্ট” দিতে চেয়েছিলো, যা তিনি গ্রহণ করেননি। তার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থেকে সে সকল ঠিকাদারদের এ ধরনের অনৈতিকতা ও দুর্নীতির চর্চা প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? কাউকে কি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, জানতে চায় টিআইবি।
বিষয়গুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা এবং নিজের দলের নেতাকর্মীসহ কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না এই অঙ্গীকারের সাথে কি সামঞ্জস্যপূর্ণ বিবেচিত হবে কিনা, এমন প্রশ্নও তোলেন ড. জামান।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শতবর্ষ উদযাপন কার্যক্রমের শুরুর লগ্নে স্মরণ করা অযৌক্তিক হবে না যে, তোশাখানা বিধি জাতির পিতার নেতৃত্বাধীন সরকার কর্তৃক প্রণীত হয়েছিলো, বর্তমান সরকারের আমলে হালনাগাদ হয়েছে, আর নভেম্বর ২০১৮ সালে তোশাখানা জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়েছিলো।