জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে রাজশাহীতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নেমেছিল।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকেই বিভাগীয় শহরটির সড়কগুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে নগরীতে বের করা হয় অসংখ্য মিছিলও। সেখান থেকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান প্রকম্পিত করে তোলে চারপাশ।
রাজশাহী নগরীতে দু‘টি স্থানে মুজিববর্ষের ক্ষণগণার যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এর একটি নগর ভবনের সামনে এবং আরেকটি নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে। জেলার ৯ উপজেলাতেও ৯টি ক্ষণগণনার যন্ত্র বসানো হয়েছে। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও ক্যাম্পাসে একটি যন্ত্র বসানো হয়েছে।
রাজশাহীর নগর ভবনের সামনে এবং সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বড় পর্দায় সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। এ দুই স্থানেই অজস্র মানুষের ঢল নামে। নগর ভবনের মূল অনুষ্ঠানে ছিলেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহীস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি, বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) একেএম হাফিজ আক্তার, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার হুমায়ুন কবীর, জেলা প্রশাসক হামিদুল হক ও জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শিক্ষা শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। নগর ভবনের সামনের স্থান, গ্রিন প্লাজা এবং সামনের সড়কটিও হয়ে ওঠে লোকে লোকারণ্য। সামনের সড়কের ওপরেও বড়পর্দায় ঢাকার অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ জন্য শুক্রবার সকাল থেকেই সড়কটি বন্ধ রাখা হয়। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই এখানে জড় হন শত শত মানুষ।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহীস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি ও বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
এদিকে, নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টের ক্ষণগণনা যন্ত্রের পাশে বড়পর্দার সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন শুধু দলীয় নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ। দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এখানে উপস্থিত হন। ফলে পুরো শহরই পরিণত হয় মিছিলের নগরীতে। মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে তারা শ্লোগানে শ্লোগানে কাঁপিয়ে তোলেন পুরো এলাকা। সেখানে বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
নগর ভবনের অনুষ্ঠানে এসে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী এসএম হাবিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু বিমান থেকে নামছেন। আমরা সবাই উঠে দাঁড়িয়েছি। মনে হলো, বঙ্গবন্ধু যেন এখনই এলেন! এ এক অন্যরকম অনুভূতি।
মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার অনুষ্ঠান উপলক্ষে নগরীতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। সতর্ক অবস্থায় ছিলেন নগর পুলিশের ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের (সিআরটি) সদস্যরাও।