রাজশাহীর ‘জাফর ইমাম আন্তর্জাতিক টেনিস কমপ্লেক্স’ থেকে জাফর ইমামের নাম বাদ দেয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে রাজশাহী জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা ও কবি রুহুল আমিন প্রামাণিক। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জাফর ইমাম মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহীতে বুদ্ধিজীবীসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষদের তালিকা তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন। তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আয়েন উদ্দিন এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে গাড়িতে চড়ে প্রকাশ্যে রাজশাহী শহর দাঁপিয়ে বেড়াতেন।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী সার্কিট হাউজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে যাতায়াত এবং তথ্য সরবরাহ করতেন। জাফর ইমাম ও তার সঙ্গীদের তালিকা ধরেই হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী দীর্ঘ ৯ মাস রাজশাহীর মানুষদের হত্যা করেছে। এছাড়া জাফর ইমাম রাজশাহীতে এনএসএফ-এর মূল সংগঠক হিসেবে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের অনেক নেতাকর্মীর উপর নানা সময়ে হামলার মূল কুশীলবও ছিলেন।
রুহুল আমিন প্রামাণিক বলেন, রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী আন্তর্জাতিক টেনিস কমপ্লেক্স থেকে কুখ্যাত রাজাকার জাফর ইমামের নাম অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। আবারো তার নাম টেনিস কমপ্লেক্স থেকে অপসারণের জোর দাবি জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে এ দাবিতে বুধবার মানববন্ধনের আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, স্বাধীনতার অনেক আগে থেকেই রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত ছিল। ২০০৪ সালে মারা যান ক্রীড়া সংগঠক জাফর ইমাম। ২০০৫ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার নামে টেনিস কমপ্লেক্সটির নামকরণ করা হয়। এরপর থেকে রাজাকারের নাম অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচি করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। তারা একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বা বুদ্ধিজীবীর নামে এ কমপ্লেক্সটি নামকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন।