চলছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 10:09:27

ঢাকা: অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু পেলে অবাক হওয়ারই কথা। আজ সকাল থেকেই যাত্রীদের চমকে দেওয়ার কাজটি করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। উড়োজাহাজে কেউ বোর্ডিং করলেই পাচ্ছেন বিশেষ গিফট বক্স। কিন্তু কেন? এয়ারলাইন্সটি তার যাত্রার চার বছর পূর্ণ করে পা দিয়েছে ৫ম বর্ষে। আর এ উপলক্ষে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের উপহার দিচ্ছে। শুধু আন্তর্জাতিক রুটেই নয়, সকল অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের যাত্রীদেরও এই গিফট বক্স দেওয়া হচ্ছে।

এদেশের এয়ারলাইন্স ইতিহাসে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যাত্রীদের বিষয়টি মাথায় রেখে তা উদযাপনের রেওয়াজ তেমনটা দেখা যায় না। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রথার বাইরে গিয়ে সকাল থেকেই ভিন্নভাবে দিনটি উদযাপন করছে। 

এ প্রসঙ্গে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং সাপোর্ট এন্ড পিআর) কামরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনকে সবাই আনুষ্ঠানিকতায় পূর্ণ করে রাখে। কিন্তু সবাই এর অংশীদার কিংবা উদযাপনে যোগ দিতে পারেন না। এয়ারলাইন্স হিসেবে আমাদের প্রধান স্টেকহোল্ডার যাত্রী সাধারণ। তাই তাদেরকে এই উদযাপন ও আনন্দঘন এই দিনটির অংশীদার করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। 

‘ফ্লাই ফাস্ট-ফ্লাই সেফ’ স্লোগান নিয়ে ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই যাত্রা শুরু করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। যাত্রা শুরুর পর দেশের বিমান পরিবহন শিল্পে একের পর এক অনন্য নজির স্থাপন করছে, অর্জন করেছে সাফল্যের মাইলফলক।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদেরকে বেশ কয়েকটি স্পেশাল সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভিয়েশন শিল্পে। উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- আন্তর্জাতিক রুটের বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের জন্য রয়েছে পিক-ড্রপ সার্ভিস, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরনের পর ১০ মিনিটে ল্যাগেজ ডেলিভারী, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ২০%, সামরিকবাহিনীর কর্মকর্তা ও গলফারদের জন্য ১০% মূল্যছাড়সহ আরো নানাবিধ সুযোগসুবিধা। 

পথচলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯৮.৭% অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের। পঞ্চম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে দু’টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও দু’টি বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ইউএস-বাংলা।

যাত্রীসেবার অনন্য নজির স্থাপন করায় স্বীকৃতিস্বরূপ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে গত তিন বছর যাবৎ সেরা এয়ারলাইন্স এর মুকুট অর্জন করতে পেরেছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ১,৪০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছে এয়ারলাইন্সে। এর মাধ্যমে দেশের মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এছাড়া নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে। সেই সাথে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছে। বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে করছে আরো সূদৃঢ়।

বর্তমানে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে মোট সাতটি উড়োজাহাজ রয়েছে, যার মধ্যে ১৬৪ আসনের চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এবং ৭৬ আসনের তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০। বর্তমানে সপ্তাহে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ৩৩০টির অধিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়।

বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক এভিয়েশন ব্যবসায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরু করেছিল আজ থেকে ঠিক চার বছর পূর্বে ৭৬ আসন বিশিষ্ট দু’টি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে। শুরু থেকেই নিজস্ব ক্যাটারিংসহ ইন-হাউজ ট্রেনিং সুবিধা, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইন-ফ্লাইট সার্ভিস, যা যাত্রী সাধারনের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। 

যাত্রা শুরুর এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সকল চালু বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে সারা দেশের জনগনকে স্বল্পতম সময়ে আকাশপথের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করেছে সূদৃঢ়। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল, রাজশাহী রুটে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরুর দু’বছরের মধ্যে ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্যেমে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ঢাকা থেকে কলকাতা, মাস্কাট, দোহা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজু রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা, মাস্কাট ও দোহা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। নিকট ভবিষ্যতে আবুধাবী, জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম, দুবাই, হংকং, দিল্লী ও চেন্নাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে ইউএস-বাাংলা এয়ারলাইন্স।

ইউএস-বাংলার টিকেট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে অন-লাইন বুকিং সুবিধা। রয়েছে হোম ডেলিভারী সুবিধাও। সারাদেশে নিজস্ব ৩০টি সেলস্ অফিস রয়েছে। এছাড়া কাঠমান্ডু, কলকাতা, মাস্কাট, দোহা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, কানাডা, নিউইয়র্ক এ নিজস্ব সেলস্ অফিস আছে। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে স্কাইস্টার প্যাকেজ। যার মাধ্যমে শুধু টিকেটেই সুবিধা পাবে না বরং যাত্রীরা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ক্রয়ে ডিসকাউন্ট সুবিধাও পেয়ে থাকে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দঘন মূহুর্তে বলেন, “প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমরা যেকোন ধরনের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। আমাদের বিমান বহরে অধিক সংখ্যক আধুনিক উড়োজাহাজ যুক্ত করে চলেছি। বহরে অধিক সংখ্যক উড়োজাহাজ ও অধিক গন্তব্য সম্প্রসারনের লক্ষ্যে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কাজ করে যাচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে ইউএস-বাংলা পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।”

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাফল্যে ভরা চার বছর এর সাথে যে সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্ট, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন কর্পোরেট অফিস, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ, সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর