যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণে ৬০ ভাগ সাশ্রয়!

ময়মনসিংহ, জাতীয়

উবায়দুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2023-08-25 21:18:46

দিনদিন কৃষিতে শ্রমিক সংকট দেখা দিচ্ছে। এ কারণে শ্রমের মূল্যও বেড়ে চলছে। গত কয়েক বছর ধরে বোরো ধান রোপণ ও মাড়াইয়ের মৌসুমে শ্রমিক পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে।

আর তাই শ্রমের বিকল্প হিসেবে ময়মনসিংহে ধানের চারা রোপণে বাড়ছে যন্ত্রের ব্যবহার। সেই সঙ্গে এ যন্ত্রের প্রতি আগ্রহও বাড়ছে কৃষকদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ধান রোপণ যন্ত্রের (রাইস ট্রান্সপ্লান্টার) মাধ্যমে বোরো ধানের চারা রোপণ করলে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় শতকরা ৬০ ভাগ পর্যন্ত সাশ্রয় হতে পারে। এছাড়া রোপণযন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণে আরও কিছু সুবিধা রয়েছে।

সম্প্রতি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামে ধান রোপণ যন্ত্রের মাধ্যমে ২০ জন কৃষক ৪০ একর জমিতে চারা রোপণের কাজ শুরু করেছেন। উপজেলার চারিপাড়া গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী রোপণ যন্ত্রটি কিনেছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তাগাছা উপজেলায় দুটিসহ ময়মনসিংহ জেলায় বর্তমানে মোট ৬টি ধান রোপণ যন্ত্র রয়েছে। ময়মনসিংহ জেলায় পাঁচ বছর আগে থেকে এসব যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়। শুরুতে কৃষকদের তেমন আগ্রহ না থাকলেও গত দুই বছর ধরে আগ্রহ বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী মৌসুমের জন্য ময়মনসিংহ জেলায় মোট ২৮টি ধান রোপণ যন্ত্রের চাহিদা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে জমা পড়েছে।

এ যন্ত্রের মাধ্যমে ধান রোপণের প্রধান সুবিধা হচ্ছে- এতে একজন শ্রমিক ৮ ঘণ্টায় ২ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করতে পারেন। ২ হেক্টর জমিতে আট ঘণ্টায় চারা রোপণের কাজ করতে হলে ৮০ জন শ্রমিকের প্রয়োজন পড়ে। এছাড়া এ প্রক্রিয়ায় বীজ কম লাগে। মানুষের স্বাভাবিক চাষে হেক্টর প্রতি ৩০ কেজি বীজ প্রয়োজন হতো।

রোপণ যন্ত্রের মাধ্যমে ২২ কেজি বীজের চারায় এক হেক্টর জমিতে আবাদ করা যায়। এছাড়া এ পদ্ধতিতে উৎপাদন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়। রোগবালাইও কম হয়। তবে রোপণ যন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণের জন্য বীজতলা বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করতে হয়। সে পদ্ধতিটিও সহজ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের কৃষি প্রকৌশলী দিদারুল ইসলাম জানান, চারা রোপণ যন্ত্রের নানা সুবিধা থাকায় কৃষকের ৬০ ভাগ পর্যন্ত উৎপাদন ব্যয় কমে। আর এ পদ্ধতিতে উৎপাদন বেশি হয়, এটা পরীক্ষিত। ‘সমকালীন চাষাবাদ’ নামে সরকার উৎপাদনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায়। কৃষকরাও দিনদিন যন্ত্রের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল মাজেদ জানান, ধান রোপণ যন্ত্রের দাম প্রায় ৪ লাখ টাকা। সাধারণত জাপান ও চীন থেকে এ যন্ত্র আমদানি করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর