‘প্রতিদিন ই-পাসপোর্টের ৫শ আবেদন নিতে পারব’

ঢাকা, জাতীয়

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা | 2023-08-29 14:23:40

চালু হয়েছে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট পরিষেবা। সবার জন্য উন্মুক্ত হলেও ই-পাসপোর্টের আবেদন সবাই কি করতে পারছেন? ই-পাসপোর্টের সুযোগ-সুবিধাই বা কী? এমন সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) নিজ অফিস কক্ষে বার্তা২৪.কমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারেই-পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সাকিল আহমেদ। বার্তা২৪.কমের পাঠকদের জন্য সেই সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হল।

বার্তা২৪.কম: প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর ই-পাসপোর্ট সেবা কি পুরোপুরি চালু হয়েছে? 

মে. জে. সাকিল আহমেদ: হ্যাঁ, আমরা কিছু নীতিমালার আওতায় ই-পাসপোর্টের অ্যাপ্লিকেশন গ্রহণ করব। যাদের এমআরপি আছে এবং এমআরপির মেয়াদ আছে তারা এমআরপি নিয়েই চলতে পারবেন। এমআরপির ওপরে এখনো কোন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় নাই।

সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ, ছবি: বার্তা২৪.কম

বার্তা২৪.কম: শোনা যাচ্ছে ই-পাসপোর্টে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগবে না? 

মে. জে. সাকিল আহমেদ: না,ঠিক তা না। যদি পাসপোর্ট নতুন ইস্যুর আবেদন করে তাহলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগবে। আর যদি রি-ইস্যু হয় তাহলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগবে না।

বার্তা২৪.কম: সাধারণ মানুষ কি আবেদন করতে পারছেন? 

মে. জে. সাকিল আহমেদ: হ্যাঁ, সাধারণ মানুষ আবেদন করতে পারছেন। অনলাইনে বা পিডিএফ ফাইলে প্রিন্ট করে আবেদন করা যাবে। তবে আমরা অনলাইনে আবেদন করাতে উৎসাহিত করি। কেননা সেখানে আবেদন করলে সেবাগ্রহীতা জানতে পারবেন তাকে কোন দিনে কখন সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়েছে। অযথা এসে বসে থাকার দরকার নেই। অনলাইনে আবেদন করার পর এনআইডি নিয়ে আসতে পারলে ভালো হয়। আমরা এনআইডি নম্বর দিয়ে সব তথ্য ঠিক করতে পারব।

বার্তা২৪.কম: ই-পাসপোর্ট যারা পাচ্ছেন না তাদের জন্য কী ব্যবস্থা আছে?

মে. জে. সাকিল আহমেদ: যাদের এমআরপি আছে তারা এমআরপি নিয়েই চলতে পারবেন। আর যারা নতুন ইস্যু তারা ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যাদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা শেষ হয়ে যাচ্ছে তারাই শুধু ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এমআরপির কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। আমাদের রিসোর্স দুই ভাগে ভাগ করে ফেলছি। একদিকে এমআরপি চলছে আরেক দিকে ই-পাসপোর্ট চলছে।

বার্তা২৪.কম: ই-পাসপোর্টের জন্য আমাদের বিমানবন্দরের গেটগুলো প্রস্তুত কি না?

মে. জে. সাকিল আহমেদ: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহির্গমনে ৬টি আর আগমনে ৩টি ই-গেট স্থাপন করেছি। আরও দুটো বিমানবন্দর আর স্থলবন্দরে ই-গেট স্থাপনের কাজ চলমান আছে।

বার্তা২৪.কম: ই-পাসপোর্টের আবেদনের জন্য কতগুলো বুথ রয়েছে? 

মে. জে. সাকিল আহমেদ: আমরা প্রাথমিকভাবে আগারগাঁও-উত্তরা এবং যাত্রাবাড়ী— এই ৩টা আরপিও থেকে যাত্রা শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে সব অফিসে বুথ স্থাপন করব।

বার্তা২৪.কম:উদ্বোধনের পর দিন এখন পর্যন্ত কতগুলো আবেদন জমা পড়েছে?

মে. জে. সাকিল আহমেদ: আমরা এখন প্রতিদিন ৩০০-৫০০ আবেদন রিসিভ করতে পারি। নতুন সিস্টেম, নতুন সিস্টেমের সঙ্গে পরিচিত হতে একটু সময় লাগবে। আমাদের অপারেটরদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি, তাদেরও এটার সঙ্গে পরিচিত হতে একটু সময় লাগবে। কাজ করতে করতে ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। ই-পাসপোর্টের যন্ত্রগুলো উন্নত প্রযুক্তির। যেমন ছবিটা যদি ভালো না হয় বা ছবি পাসপোর্টে দেওয়ার মতো না হয় তাহলে কম্পিউটার গ্রহণ করে না। এছাড়া আঙুলের ছাপ ঠিকমতো না হলে গ্রহণ করে না। চোখের কর্নিয়ার ইমেজটা যদি ঠিকমতো না আসে গ্রহণ করে না। এসব কারণে প্রাথমিকভাবে সময়টা একটু বেশি লাগতে পারে। কিন্তু ধীরে ধীরে এই সময়টা কমে যাবে। তখন অ্যাপ্লিকেশন গ্রহণ করার গতিও বেড়ে যাবে।

বার্তা২৪.কম এর আলাপচারিতায় কথা বলছেন মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ

বার্তা২৪.কম: আবেদন করার পর ই-পাসপোর্ট কতদিনের মধ্যে হাতে পাবেন আবেদনকারী?

মে. জে. সাকিল আহমেদ: আগের মতোই রেগুলার, এক্সপ্রেস, সুপার এক্সপ্রেস—এই তিন ক্যাটাগরিতে আবেদন করা যাবে। একই সময়সীমা ২১ দিন ও ৭ দিন। ২ দিনের মধ্যেও পাসপোর্ট দেব, সেটা সুপার এক্সেপ্রেসে আবেদন করলে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিজ উদ্যোগে আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।

বার্তার সঙ্গে আলাপ চলাকালে এক কর্মকর্তা এসে মহাপরিচালককে বললেন— ‘সব ঠিক করে আসলাম, ই-পাসপোর্টের সব প্রস্তুত! আগামী ৫ সপ্তাহের জন্য বুকড।

এরপর মে. জে. সাকিল আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেখলেন ৫ সপ্তাহের জন্য এরই মধ্যে বুকড হয়ে গেছে! আসলে নতুন জিনিস, এর জন্য সবার আগ্রহ থাকবে।

বার্তা২৪.কম: বুকড কারা করেছে?

মে. জে. সাকিল আহমেদ: গত দুইদিনে দুই হাজার আবেদন জমা পড়ছে। আর এজন্যই বুকড। আমরা সিরিয়ালি তাদেরকে ডাকবো। শিডিউলটা আমরাই করে দিচ্ছি। আবেদন করার পর আমরা তারিখ ও সময় দিয়ে দিচ্ছি যে, অমুক দিন ওই সময় তার সাক্ষাৎকার। শুধু শুধু এখানে এসে বসে থাকার দরকার নেই।

বার্তা২৪.কম: ই-পাসপোর্ট সেবা নিতে সময় বেশি লাগছে কি?

মে. জে. সাকিল আহমেদ: প্রাথমিকভাবে সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে। এটাই স্বাভাবিক। কেননা নতুন সিস্টেমে পুরোপুরি বুঝে উঠতে একটু সময় লাগবেই। তবে ই-পাসপোর্ট আর অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করার ফলে দালালদের দৌরাত্ম্য কমে আসবে। তাই আমরা সবাইকে অনলাইনে উৎসাহিত করি।

বার্তা২৪.কম: বার্তাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মে. জে. সাকিল আহমেদ:বার্তাকেও ধন্যবাদ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর