আন্দোলনের জন্য সংঘবদ্ধ হচ্ছেন পোশাক শ্রমিকরা

, জাতীয়

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 08:22:36

ঢাকা: পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। কিন্তু ১৬ জুলাই মালিকপক্ষ থেকে ৬ হাজার ৩২০ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাবনা দেওয়ার পর থেকেই হতাশ সাধারণ শ্রমিকরা। আন্দোলনের জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে সংঘবদ্ধ হচ্ছেন তারা। চূড়ান্ত সুপারিশ শ্রমিকদের দাবির বিপক্ষে গেলেই আন্দোলন শুরু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

শ্রমিক সংগঠনগুলোর সূত্রে জানা যায়, ১৬ জুলাই নিম্নতম মজুরি বোর্ডের তৃতীয় বৈঠকে বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে ৬ হাজার ৩২০ টাকা ন্যূনতম মজুরি করার প্রস্তাবনা দিয়েছে। এতে শ্রমিকরা অনেকটা অবাকই হয়েছেন। কারণ পাঁচ বছর পর ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছর পর মালিকপক্ষ মাত্র ১ হাজার ২০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। অথচ এই সময়ে মানুষের দৈনন্দিন খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। আর তাই শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। শ্রমিকরা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যোগযোগ করছেন পরবর্তী করণীয় প্রসঙ্গে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক নেতা বলেন, দেখুন পাঁচ বছর পর পর ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি হয় এটা শ্রমিকরাও বোঝেন। এবার যা নির্ধারণ হবে তাই কিন্তু আগামী পাঁচ বছর বহাল থাকবে যদি তেমন কোনো বড় অসন্তোষ না হয়। তাই তারা এবার তাদের চাহিদার বিষয়ে সচেতন। বেশ কিছু গার্মেন্টস এর শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে যে ন্যুনতম মজুরি সাড়ে ৮ হাজার টাকার নিচে হলেই তারা আন্দোলনে যাবে। তারা নিজ উদ্যোগেই সংগঠিত হচ্ছেন।

এসব বিষয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম এর সভাপতি মোশরেফা মিশু বার্তা২৪.কমকে বলেন, ন্যূনতম মজুরি শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী নির্ধারিত না হলে শ্রমিকদের আন্দোলনে নামার আশঙ্কা রয়েছে। শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ন্যুনতম মজুরি ১২ হাজার ২০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে কিন্তু শ্রমিকদের দাবি ছিলো ১৬ হাজার টাকা। তারপরও যদি শ্রমিকদের মজুরি আরো কমানো হয় তাহলেতো তাদের মধ্যে অসেন্তাষ তৈরি হবেই। আর সে জন্য তারা যদি এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতেও থাকেন তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কিন্তু আমরা আশা করছি কোনো ধরনের অশান্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ার আগেই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

গার্মেন্টস-শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিজিএমইএ কী করে ৬ হাজার ৩২০ টাকা ন্যুনতম মজুরির প্রস্তাবনা দিল তা আমার বোধগম্য নয়। এটি রীতিমতো শ্রমিকদের নিয়ে তামাশা করার শামিল। এতে শ্রমিকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তেও যদি এমন কিছু হয় তাহলে তো শ্রমিকরা আন্দোলনে নামতেই পারেন। তখন পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। এক্ষেত্রে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাই সকল সমস্যার সমাধান করতে পারে।

১৬ জুলাই নিম্নমজুরি বোর্ডে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ থেকে ন্যুনতম মজুরির প্রস্তাব জমা দেয়। উক্ত প্রস্তাবে মালিকপক্ষ থেকে ন্যুনতম মজুরি ৬ হাজার ৩২০ টাকা ও শ্রমিক পক্ষ থেকে ১২ হাজার ২০ টাকা করার প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। তারপর থেকেই মালিকপক্ষের প্রস্তাবনা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। বর্তমানে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩শ টাকা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর