টিআইবির অভিযোগ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: গণপূর্তমন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 02:57:04

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, রাজউকের বিরুদ্ধে টিআইবি কর্তৃক আনীত অভিযোগের তথ্য কোনভাবে সত্য নয়। এর কোন ভিত্তি নেই এবং এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তিনি বলেন, জনবান্ধব একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে কারো দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হেয় প্রতিপন্ন করে আলাদা বাহবা নেয়ার চেষ্টা করেছেন তারা। আমি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে বিশেষ কোন প্রকল্পের অনুমোদনই হয়নি। সুতরাং এ সংক্রান্ত ঘুষ দেয়ার তথ্য সঠিক নয়।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কর্তৃক প্রকাশিত ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লিখিত বিভিন্ন তথ্য নিয়ে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়।

নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনীতির প্রভাব সংক্রান্ত টিআইবি’র এক অভিযোগ প্রসঙ্গে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, আমি মন্ত্রী হবার পরে রাজউকে কোন নিয়োগ হয়নি। শুধু আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। টিআইবি বলেছে ফ্ল্যাটের চাবি প্রদানের ক্ষেত্রে টাকা দিতে হয়। উত্তরায় ফ্ল্যাট বরাদ্দ অনলাইন পদ্ধতিতে করে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে ঐদিনই তাদের চাবি দেয়া হয়েছে। শুধু সেদিন অনুপস্থিত ব্যক্তিরাই পরবর্তীতে চাবি নিয়েছেন।

ভূমির ছাড়পত্র, আমমোক্তারনামার ক্ষেত্রে টাকা প্রদানের বিষয়ে তিনি বলেন, রাজউকে নির্ধারিত আইন করে দিয়েছি, নির্ধারিত সময়ের ভেতরে সেবা প্রদান করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা অটোমেশন চালু করেছি। এক্ষেত্রে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ আসার যৌক্তিকতাই নেই।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, রাজউকে কঠোর অবস্থান নেয়া হয়েছে। একটা সময় রাজউক দালাল পরিবেষ্টিত বলে অভিযোগ ছিলো। বেশ কিছু দালালদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। দৃশ্যমানভাবে কোন দালালের উপস্থিতি রাজউকে নেই। তারপরও সুনির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা টিআইবি বললে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতাম। আমি আশা করি টিআইবি এ জাতীয় অভিযোগ আনার পূর্বে আমাদেরকে জানাবেন কী অভিযোগ পেয়েছেন, কাদের কাছে পেয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। আমরা সেটাকে কঠোরভাবে ধারণ করেছি। যেসকল দুর্নীতির অভিযোগ ছিলো তার অধিকাংশ আমরা বিনাশ করেছি এবং আগামীতেও করতে চাই। টিআইবিসহ অন্যান্যদের বলব শুধু অভিযোগ উত্থাপন নয়, সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট তথ্য দিন। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। গণপূর্ত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরে অনিয়মের সাথে জড়িত ৯২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি যা দেশের ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ আমাদের রুটিন ওয়ার্ক। প্রতিদিনই কোন না কোন অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আমাদের কোন অভিযানই বন্ধ হয়নি। তবে গতি বৃদ্ধির জন্য আমরা জনবল বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে হেয় করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে জনহয়রানির প্রতিষ্ঠান নয়, জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার চেষ্টা করছি। দৃশ্যমান অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যা ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমেও এসেছে। মন্ত্রণালয়াধীন দফতরসমূহে যেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি, সেখানেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছি যেন কোনভাবেই ন্যুনতম দুর্নীতি না থাকে। অনুগ্রহ করে অনুমানভিত্তিক অভিযোগ এনে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে হেয় করবেন না।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর