ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে হেলাল উদ্দিন (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিখোঁজের ১৬ দিন পরেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। নিখোঁজ ব্যবসায়ী উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের মো. হাসিম উদ্দিনের ছেলে।
গত ১৮ জানুয়ারি রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন হেলাল। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ঈশ্বরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তবে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ বের করতে পারেনি পুলিশ।
জানা গেছে, হেলাল উদ্দিন উপজেলার উচাখিলা বাজারে চুন ও তামাক পাতা বিক্রি করতেন। গত ১৮ জানুয়ারি তিনি বাড়ি থেকে ব্যবসার কাজে উচাখিলা বাজারে যান। ওই দিন রাতে হেলাল বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন অনেক খুঁজাখোঁজি করেও তার সন্ধান পাননি।
এরপর হেলালের স্ত্রী মাজেদা খাতুন নিখোঁজের ঘটনায় ২০ জানুয়ারি ঈশ্বরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এদিকে ২১ জানুয়ারি রাতে হেলালের নম্বর থেকে তার বড় ভাই মো. দুলাল মিয়ার মোবাইলে কল আসে। ফোনের অপর প্রাপ্ত থেকে বলা হয়- ‘তোর ভাই কি হারানো গেছে? তোর ভাইকে আমরা নিয়ে গেছি। ফেরত পেতে হলে ২ লাখ টাকা লাগবে।’
তখন দুলাল মিয়া এত টাকা দিতে পারবে না বলে অনুনয় বিনয় করলে ১ লাখ টাকায় রফা হয়। টাকা নিয়ে যেতে বলা হয় উপজেলার উচাখিলা-লক্ষ্মীগঞ্জ সড়কে।
সেদিন ওই জায়গায় গিয়ে মোবাইল ফোনে কল করলে নম্বরটি বন্ধ পান দুলাল। বিষয়টি পুলিশকে জানান তিনি। পুলিশ মোবাইল ফোনের নম্বরটি দিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় উচাখিলা ইউনিয়নের মঘা গ্রামের নুর ইসলাম ও তার ছেলে আজিজুলকে আটক করে।
আটকরা পুলিশকে জানান, নিখোঁজের ঘটনার অন্তত ১৬ দিন আগে তাদের সিমসহ মোবাইলটি হারিয়ে যায়। পুলিশ তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের তথ্য না পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়।
হেলালের ভাই দুলাল মিয়া বলেন, ভাই নিখোঁজের পর ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার ঘটনায় দুজনকে আটক করা হলেও পরে তাদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু আমার ভাই এখনো উদ্ধার হয়নি। ভাই কি জীবিত আছে নাকি তার সাথে খারাপ কিছু হয়েছে—এই চিন্তায় ঘুমাতে পারছি না।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাওন চক্রবর্তী বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় নিখোঁজ ব্যবসায়ীকে উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্ত পরিবারের লোকজন আমাদের কিছু ক্ষেত্রে অসহযোগিতা ও কিছু বিষয় গোপন করায় তদন্ত ও উদ্ধার কাজে বিঘ্ন হচ্ছে। তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে, আশা করছি দ্রুত উদ্ধার করতে পারব।