তিন বছর ধরে কমিটি নেই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের। এতে ঝিমিয়ে পড়েছে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম। অনেকে দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ করেও দলীয় পরিচয় পাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে অনেক ছাত্রলীগ কর্মী দলীয় পরিচয় ছাড়াই ছাত্র রাজনীতি ছেড়েছেন।
জানা যায়, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছাত্রলীগ কর্মী ওমর মিয়াদ হত্যার জেরে ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর বিলুপ্ত করা হয় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি। এরপর একাধিকবার সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। ফলে পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা আর ক্ষোভ বেড়েছে।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সবশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০১৪ সালে। কমিটিতে শাহরিয়ার আলম সামাদকে সভাপতি ও এম. রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই কমিটি গঠনের পর জেলা ছাত্রলীগে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। কমিটির পদপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন পদবঞ্চিত একটি অংশ। একাধিকবার কমিটি স্থগিতও করা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটি সামাদ-রায়হানকে সম্মেলন করার জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দিলেও তারা সম্মেলন করতে ব্যর্থ হন। এরপর ২০১৭ সালের অক্টোবরে নগরের টিলাগড় কেন্দ্রীক অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী ওমর মিয়াদ। এই হত্যায় জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরী প্রধান আসামি হন। এই ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রায় দেড়শো জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হলেও আর কমিটি গঠন করা হয়নি।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ত্যাগী ও শিক্ষিত ছাত্রদের বাদ দিয়ে সুবিধাবাদীদের দিয়ে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ফলে বার বার সমালোচিত হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রম।
ছাত্রলীগের নেতা রাব্বি আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আছি। তবে এখনো কোনও পদ পাইনি। প্রকৃত ছাত্রদের হাতে সিলেট ছাত্রলীগের নেতৃত্ব তুলে দেয়া উচিত। এতে সিলেট ছাত্রলীগ তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে।
মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি একে এম মাহমুদুল হাসান সানি বলেন, কমিটি না থাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য। তারা আমাদের বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব সিলেট ছাত্রলীগের কমিটি করা হবে।