বিএনপি দাঙ্গা-হাঙ্গামা করতে পারে-এমন আশঙ্কায় মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি বলেছে-এটি আন্দোলনের অংশ। এখন বিএনপির আন্দোলন মানে মানুষ মনে করে জ্বালাও-পোড়াও, হাঙ্গামা। বিএনপির এ হাঙ্গামার আশঙ্কায় মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভোটার উপস্থিতি বেশি। আর ৫৫ লাখ ভোটারের একটি শহরে সুন্দর ভোটের আয়োজন করার জন্য নির্বাচন কমিশন ধন্যবাদ পাবার যোগ্যতা রাখে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ইভিএমই প্রতিটি রাজনৈতিক দলের একজন এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। অথচ ইভিএম নিয়ে বিএনপি নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিএনপি সব সময় প্রযুক্তি ভয় পায়। সেই ভীতি থেকেই তারা ইভিএমের বিরোধিতা করে আসছে।
ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে নানা রকম বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। কিন্তু উপমহাদেশের মানদণ্ডে এটি সবচেয়ে ভালো নির্বাচন। ভোট কেন্দ্রে কোনো হাঙ্গা-দাঙ্গা ঘটেনি। সিল মারার ঘটনাও ঘটেনি। ইভিএমে ভোটগ্রহণ করার কারণে বিশৃঙ্খলা হয়নি। কারণ ইভিএমে একজনের ভোট অন্যজনের দেওয়ার সুযোগ নেই, যোগ করেন তিনি।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় বিনামূল্যে বাংলাদেশে সাব-মেরিন ক্যাবল দিতে চাওয়া হয়েছিল। তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সাব-মেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হলে বাংলাদেশের সব গোপন তথ্য বাইরে চলে যাবে। তিনি সাব-মেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশকে যুক্ত করেননি। পরে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করে আমাদের সাব-মেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হতে হয়েছে।
সভায় আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় দলকে গুরুত্ব দিতে হবে। নিজস্ব বলয় তৈরি করা সমীচিন হবে না। মৌচাকে মধু না থাকলে কাউকে পাশে পাওয়া যায় না। ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। অনুপ্রবেশকারীরা সাংগঠনিক পদে থাকলেও বাদ দিতে হবে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর যারা পিঠ বাঁচানোর জন্য আওয়ামী লীগে এসেছেন, তাদের রাখা যাবে না।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।
প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বেগম আখতার জাহান, মেরিনা জাহান কবিতা, রাজশাহীর এমপি আয়েন উদ্দিন, ডা. মুনসুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এবং সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারার সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা।
এদিকে, বিকেলে তথ্যমন্ত্রী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি পাবনার উদ্দেশে রওনা হবেন। সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় অংশ নেবেন তিনি।