বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) অফিসে ঢুকে এক সহকারী প্রকৌশলীকে চড়-থাপ্পড় মারার পর গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন আসলাম খান নামের এক ঠিকাদার।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ‘বিএমডিএ’র প্রধান কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বিকেলে ঠিকাদার আসলাম খানের বিরুদ্ধে রাজশাহীর নগরীর রাজপাড়া থানায় লিখিতভাবে মামলার এজহার দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী প্রকৌশলী মো. ফরিদুল ইসলাম।
তিনি বিএমডিএ’র পঞ্চগড় রিজিওনে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। তবে থানার ওসি বাইরে থাকায় এখনও মামলাটি রুজু করা হয়নি।
জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে মোবাইলে জানিয়েছেন। আমি থানার বাইরে ডিউটিতে আছি। থানায় ফিরে এজহার যাচাই করে মামলা রুজুর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী প্রকৌশলী উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে অফিসের সভা শেষে ভুক্তভোগী প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম বিএমডিএ’র প্রধান কার্যালয়ের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এসময় ঠিকাদার আসলাম খান তাকে পাশে ডেকে নিয়ে চর-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। পাশে থাকা সহকর্মীরা এসে ফরিদুলকে উদ্ধার করে। পরে প্রকাশ্যে ‘গুলি করে হত্যার’ হুমকি দিয়ে চলে যান আসলাম খান।
রাজশাহী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডর (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী আশিক রহমান বলেন, ‘আমি এই ঘটনার একটি ভিডিও দেখলাম। তাতে দেখা গেছে-ভুক্তভোগী প্রকৌশলী ফরিদুলকে ওই ঠিকাদার পাশে ডেকে নিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করছে। পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো বিষয়টি শুনেছি। তাকে আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার আসলাম খান মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘২০১২ সালের পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় আমি প্রকৌশলী ফরিদুলের অধীনে একটি বিল্ডিংয়ের কাজ পাই। এমনিতেই কাজটি পুরাতন রেটের ছিল। তাছাড়া সাড়ে ৫ ফুট ওয়ালের কাজ জোরপূর্বক ৮ ফুট করিয়ে নিয়েছে। হিসাবের চেয়ে একটন রডও বেশি গেছে। সে আমাকে মানসিক এবং আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে আমি তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছিলাম।’ এসময় তার (ফরিদুল) থেকে ২ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলেও দাবি করেন অভিযুক্ত ঠিকাদার।
ভুক্তভোগী প্রকৌশলী মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে ওই ঠিকাদার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। এমনকি পিস্তল দিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকিও দিয়েছে। লাঞ্ছিত করার সময় আমার সহকর্মীরা এগিয়ে গেলে তাদেরকে হত্যার হুমকি দেন এই ঠিকাদার। পরে বিষয়টি আমি বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করি। তিনি আমাকে আইনি পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। আমি থানায় মামলার এজহার দাখিল করেছি। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’