পোশাক শ্রমিক ধর্ষণের বিচার, সব কারখানায় যৌন নিপীড়ন বিরোধী অভিযোগ সেল গঠন এবং শ্রমিক স্বার্থের পক্ষে শ্রম আইন ও বিধিমালা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি আশুলিয়া শাখার উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
আশুলিয়া থানা শাখার সভাপ্রধান বাবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শামা, কেন্দ্রীয় সদস্য এফ এম নূরুল ইসলাম, থানা শাখার সহ-সভাপ্রধান মাসুদ রানা বাবলু, সাধারণ সম্পাদক জিয়াদুল ইসলাম, আরিফা আক্তার, রূপালী আক্তারসহ স্থানীয় নেতারা।
মানববন্ধনে তাসলিমা আখতার বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি আশুলিয়ার ইউনিকে ইপিজেডের নারী পোশাক শ্রমিক এবং কাফরুলে ৩১ ডিসেম্বর রাতে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও সারা দেশে শ্রমিক, শিক্ষার্থী, শিশু কোন শ্রেণির নারী নিরাপদ নেই। সমাজে পুরুষতান্ত্রিক মানস কাঠামো এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে ধর্ষণ ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, আশুলিয়ায় এক পোশাক শ্রমিক বেতন না পাওয়ায় সময়মতো বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে পারেননি, এ কারণে বাড়ির মালিকসহ তিনজন ওই শ্রমিকের স্বামীকে আটকে রেখে তাকে গণধর্ষণ করে। একইভাবে কাফরুল এক শ্রমিকও ধর্ষণ করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের গুণ্ডারা।
অবিলম্বে এ দুটি ধর্ষণের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাসলিমা আখতার।
তিনি বলেন, প্রতিটি কারখানায় সকল শ্রমিকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে সীমাহীন টার্গেটের চাপ। অসম্ভব টার্গেট পূরণ করতে না পারলে শ্রমিকদের ওপর নেমে আসে অবর্ণনীয় নির্যাতন। বিশেষত নারী শ্রমিকদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা অহরহ কারখানাগুলোতে ঘটছে। জীবন দিয়ে যারা উৎপাদনের চাকা সচল রাখছেন, তারা যদি মানুষ হিসেবে, নারী হিসেবে ন্যূনতম সম্মান না পান সেটা এই শিল্পের চরম ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ।
তাসলিমা আখতার আরো বলেন, হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ কারখানাতে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে অভিযোগ করার মতো কোন অভিযোগ সেল গঠন করা হয়নি। অবিলম্বে সকল কারখানায় যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা ও অভিযোগ সেল গঠন এবং এলাকায় এলাকায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান তিনি।
মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, জাতীয় সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী স্বীকার করেছেন ২০১৯ সালে ৬০-এর অধিক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে এবং ৩২ হাজারের অধিক শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছেন। এ ছাঁটাই এখনো অব্যাহত আছে। অন্যদিকে এই ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের একটি বড় অংশকে কালো তালিকা করা হয়েছে সেন্ট্রাল ডাটা বেইজে যাতে তারা অন্য কারখানাতেও চাকরি না করতে পারেন। বাণিজ্যমন্ত্রী মালিকের মন্ত্রী হয়ে আছেন, শ্রমিকের মন্ত্রী হতে পারেননি। কেননা তিনি শ্রমিকের পক্ষে কোন আশ্বাস দিতে পারেননি।