‘জনগণের ওপর আস্থা নেই বলেই বিদেশিদের কাছে বিএনপির নালিশ’

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-19 09:12:35

জনগণের ওপর আস্থা নেই বলেই বিএনপি বিদেশিদের কাছে নালিশ দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে এখন দেউলিয়াপনা অবস্থায় নিপতিত হয়েছে। এখন আসলে তাদের নালিশ করাই রাজনৈতিক পুঁজি। নালিশই তাদের একমাত্র অবলম্বন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশিদের কাছে যতই ধর্ণা দিচ্ছে বিষয়টা ততই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে দেশের মানুষের প্রতি তাদের আস্থা কম। সে কারণে বিদেশ নির্ভর হয়ে পড়ছে। যদি দেশের জনগণের প্রতি তাদের আস্থা থাকতো তাহলে বিদেশিদের কাছে এতো ঘন ঘন ধর্ণা দেওয়া, নালিশ করা থেকে বিরত থাকতো।

তিনি বলেন, তারা সভা, সমাবেশ করে জনগণের কাছে নালিশ করতে পারে। বিচারক হতে পারে আমাদের দেশের জনগণ। তারাই ভোট দেবে, আন্দোলন করবে, তারা রেসপন্স না করলে আন্দোলন হবে না, তারা ভোট না দিলে আমরা জিততে পারবো না এটাই বাস্তবতা।

অনূর্ধ্ব-১৯ দল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করলো তেমনিভাবে দেশকে আরো নিরাপদ ও সুন্দর স্থানে এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজনৈতিক দলগুলো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভূমিকা রাখবে পারবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনীতিতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকবেই। তবে রাজনীতির একটি ভাষা আছে। আমাদের রাজনীতিটা ডিভাইসিভ অ্যান্ড পোলারাইজড না হয়। আমরা খুব বেশি পোলারাইজড হয়ে যাচ্ছি, খুব বেশি ডিভাইসিভ হয়ে যাচ্ছি। সেই মনোভাবটা যদি আমরা পরিহার করতে পারি। তাহলে এখানে গণতন্ত্রের বিউটি বজায় রাখতে পারবো।

তিনি বলেন, আমরা প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করি আক্রমণের ভাষার মধ্যেও একটা শালীনতা থাকতে হবে। যেমন ড. কামাল হোসেন সাহেব সম্প্রতি বক্তব্য দিতে গিয়ে খেই হারিয়ে হঠাৎ বলে ফেললেন এই সরকারকে লাথি মেরে নামাবে। আবার লাথি মেরে এই সরকারকে বিদেশে পাঠিয়ে দিবে। দুটি শব্দ উনি ব্যবহার করেছেন। এ দুইটি গর্হিত ভাষা। এটা রাজনীতির জন্য শোভন নয়। তার মতো একজন প্রবীণ নেতা তিনি যদি লাথি মেরে সরকারকে ক্ষমতা থেকে তাড়াতে বলেন এবং সরকারের যারা আছেন তাদের লাথি মেরে বিদেশ পাঠাবেন এ ধরনের অশালীন ও অমার্জিত বক্তব্য রাখেন তাহলে রাজনীতি কেমন হবে ৷ সৌজন্যবোধ, সৌন্দর্যবোধ এবং রাজনীতিটাকে শালীন পরিমার্জিত ভাষায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। আমরা যারা রাজনীতি করি প্রতিপক্ষকে আক্রমণে যৌক্তিক ভাষা ব্যবহার করি। আমরা ব্যক্তিগত ও অশালীন বক্তব্য থেকে বিরত থাকলে আমার মনে হয় বিভেদের মধ্যে মতান্তর থাকবে তবে মতান্তরের যেন মনান্তরে পরিণত না হয়। মনান্তর রাজনীতিতে থাকবেই না মত নানা পথ থাকবে। কিন্তু মতান্তর আর মনান্তর এক বিষয় নয়। মনান্তরটা যদি আমরা পরিহার করতে পারি তাহলে রাজনীতির পরিবেশটা আরো সুন্দর হবে। গণতন্ত্রের জন্য সেটা শুভ হবে।

গণসংবর্ধনায় সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ দেখতে পাবো কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তো মুজিব বর্ষের ক্ষণগণনায় সকল দলকে দাওয়াত দিয়েছি। কিন্তু কেউ কেউ আসেননি। ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকীসহ অনেকেই এসেছেন। এর মধ্যে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিকদল বিএনপি সেখানে তাদের শুভবোধের পরিচয় দিতে পারতো। এধরনের ঘটনাগুলো রাজনীতিতে ওয়ার্কিং আন্ডারস্ট্যান্ডিং টা বজায় রাখতে পারে। যেমন বেগম জিয়ার সন্তান মারা যাবার পর প্রধানমন্ত্রী শোকাহত মা বেগম জিয়াকে সান্ত্বনা দিতে গিয়েছিলেন কিন্তু গেট খোলা হলো না। এভাবে তো আমরা নিজেদেরকে ও কর্মক্ষেত্র দেয়াল তুলে ফেলেছি। এই দেয়াল তোলার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো কাজ করে তা পরিহার করতে পারি। রাজনীতিতে সৌজন্যতা হারিয়ে যাচ্ছে সেটা দুঃখের বিষয়। রাজনীতিতে সৌজন্যবোধ থাকা উচিৎ। আমরা এখন সবকিছুতেই মানি না মানবো না। নির্বাচনের ফলাফল মানি না, আইনকানুন মানি না, নিজেদের পক্ষে না গেলে বিচার মানি না। এই যে মানি না সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত।

এ সম্পর্কিত আরও খবর