পাপিয়ার পেছনে যারাই থাকুক না কেন, খুঁজে বের করা হবে: কাদের

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 11:15:03

পাপিয়ার পরিচয় যাই হোক, অপরাধী হিসেবে অপরাধ অনুযায়ী তার বিচার হবে। একই সঙ্গে এর পেছনে যারা আছেন, তাদের খুঁজে বের করা হবে বলেও জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. মনমোহন প্রকাশের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অপরাধী অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি পাবে। এ সরকার দলের হোক, দলের বাইরে হোক, কোনো অপরাধীকে পার পেয়ে যেতে দেয়নি। সব অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। পাপিয়ার পরিচয় যাই হোক, অপরাধী হিসেবে অপরাধ অনুযায়ী তার বিচার হবে।

পাপিয়ার পেছনে যারা আছেন, তাদের খুঁজে বের করে সামনে আনা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অপরাধীর বিচার করতে গেলে তো পেছনের লোক খোঁজা হয়, হবে না কেন? যখন আদালতে বিষয়টি যাবে, তখন আদালতে সব কিছুই আসবে। তারা সামনে আসবেন না এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। এ সরকারের আমলে এ ধরনের বিচার প্রক্রিয়ায় সবই এসে গেছে। যখন আদালতে বিষয়টি যাবে, তখন আদালতে সব কিছুই আসবে।

পাপিয়া যে অপরাধে জড়িয়ে ছিলেন, তা কি জানতেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে বুঝতে পারলে তো এটা হতো না।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন ধরেছে, কিন্তু শুদ্ধি অভিযানে তাকে ধরা হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধের জন্য যাদের গ্রেফতার করছে, সেটি কি সরকারের ইচ্ছার বাইরে হচ্ছে? সরকারের এ বিষয়টাতে সায় আছে বলেই সরকার এসব ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছে। ফলে আজ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নিচ্ছে। অপরাধ, অন্যায়, অপকর্মকারীদের পরিচয় যাই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে কোনো সরকারের আমলে দলীয় অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে নজির নেই।

পাপিয়ার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সাংগঠনিকভাবে তাকে এক্সপেল্ড করা হয়েছে। এক্সপেল্ড মানে আজীবন বহিষ্কার আর সাসপেন্ড মানে সাময়িক। সাংগঠনিকভাবে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

দলের ভেতর এ রকম আরো কেউ আছেন কিনা জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, এদেশে আগেও সরকার ছিল। আওয়ামী লীগের আগেও অনেক সরকার ছিল। ১৯৭৫ এরপর ২১ বছর পাওয়ারে ছিলাম না, তখনও সরকার ছিল। পার্থক্যটা হলো অন্যান্য সরকার অপরাধী ও অপকর্মকারীদের বিচার বা তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টি অবহেলা উপেক্ষা করেছে। তাদের নিজের দলের অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না বরং অপরাধীদের বিষয়ে তাদের আচারণ ছিল দুর্বল। সে কারণে অপরাধীরা, অপকর্মকারীরা শাস্তি পায়নি।

তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে সরকারের পরিচয় ব্যবহার করে হোক আর যেভাবেই হোক, কেউ অপরাধ করলে তার পরিচয় দলীয়ও হয়। এ সরকারের পক্ষ থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া আছে যে পরিচয় যাই হোক, অপরাধীর বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অপরাধের বিচার যেন করা হয়। অপরাধের বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। এ কারণে পরিচয় যাই হোক, সবাইকে ধরা হচ্ছে। বিচার হচ্ছে।

উল্লেখ্য, শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ত্যাগের সময় অবৈধ অর্থসহ শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ, তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমন, সাব্বির খন্দকার ও শেখ তাওবাকে আটক করে র‌্যাব। পাপিয়ার ব্যক্তিগত বিষয় দেখাশোনা ও সম্পত্তির হিসাব দেখাশোনা করতেন সাব্বির ও তাওবা।

পাপিয়া নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আটক হওয়ার পর তাকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগ।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ফার্মগেট ইন্দিরা রোডে পাপিয়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তল, দু’টি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে পাপিয়া আর তার স্বামীর ১৫ দিন করে আর তাদের দুই সহযোগীর তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এ সম্পর্কিত আরও খবর