সিলেটে গুদামে জায়গা সংকটে সময়মতো ধান কিনতে পারেনি খাদ্য অধিদপ্তর। ফলে বাধ্য হয়ে সিলেটে সরকারিভাবে আমন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েছে তারা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সিলেটের কৃষকেরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছরের মতো গতবছরও আমন মৌসুমে সারাদেশে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজিতে ধান কেনার উদ্যোগ নেয় সরকার। গত বছরের ২০ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ধান সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়।
শুরুতে সিলেট জেলায় ১৬ হাজার ৩৪৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও পরে তা ১৮ হাজার ১০৪ মেট্রিক টন করা হয়। তবে গুদামে জায়গা না থাকায় গত সপ্তাহে সিলেটে প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন ধান কম কেনার সিদ্ধান্ত নেয় খাদ্য বিভাগ। এছাড়া সিলেটের কয়েকটি গুদাম থেকে চাল চট্টগাম পাঠিয়েও গুদামের জায়গা খালির চেষ্টা করা হচ্ছে।
খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সিলেটে ১ টি গুদামের ধারণক্ষমতা ১৭ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন। আর আমন মৌসুমে সিলেটে শুধু ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৮ হাজার ১০৪ মেট্রিক টন, সেদ্ধ ও আতপ চাল প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন। এছাড়া গুদাম গুলোতে আগে থেকেই আরও প্রায় ১১ হাজার ধান, চাল ছিলো। ফলে গুদাম গুলোতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংরক্ষণ সম্ভব হয়নি। তাই ধান সংগ্রহ কমানোর পাশাপাশি কিছু চাল চট্টগামের দেওয়ানহাট ও হালিশহরে পাঠিয়ে দিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
জানা গেছে, বিশ্বনাথ উপজেলায় গুদামের ধারণক্ষমতা ৫শ মেট্রিক টন। আর ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৫৭৪ মেট্রিক টন। সেখানে এখন সাড়ে তিনশো মেট্রিক টন ধান কম কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যদিও ধান কেনা হয়েছে ৮৫৫ মেট্রিক টন। এছাড়া ১৩০ মেট্রিক টন চাল বিশ্বনাথ থেকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
কানাইঘাটে গুদামের ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৫শ মেট্রিক টন। সেখানে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৩৮৬ মেট্রিক টন। পরে তা কমিয়ে করা হয়েছে ১ হাজার ৮৮৬ মেট্রিক টন। আর ধান কেনা হয়েছে ১ হাজার ১১৫ মেট্রিক টন। কানাইঘাট থেকে ২শ মেট্রিক টন চাল চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা খাদ্যগুদামের ধারণক্ষমতা ১ হাজার মেট্রিক টন। সেখানে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৫৪৩ মেট্রিক টন। এই উপজেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়নি। তবে গুদাম খালি করতে ১৮০ মেট্রিক টন চাল চট্টগ্রামের হালিশহরে পাঠানো হয়েছে।
জৈন্তাপুর উপজেলায় গুদামের ধারণক্ষমতা মাত্র ৫শ মেট্রিক টন। সেখানে প্রায় ৪ গুনের বেশি ২ হাজার ২৮৮ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।
এখন ১ হাজার মেট্রিক টন কমিয়ে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৮৮ মেট্রিক টন। এরপরও মাত্র ৬৩২ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। এই গুদাম থেকে ১৩০ মেট্রিক টন চাল চট্টগ্রামের হালিশহরে পাঠানো হয়েছে। নতুন করে ধান কিনে রাখার জায়গা নেই এই গুদামে।
সিলেট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোজ কান্তি দাস চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গুদামে জায়গা না থাকায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে। আমরা কিছু চাল চট্টগ্রামে পাঠিয়েছি। আর ২ হাজার মেট্রিক টন চাল পাঠাবো। আশা করি নির্ধারিত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।