পাবনা: এক ছেলের সঙ্গে তিন স্কুলছাত্রীর প্রেম! তাও আবার একই ক্লাসের তিন বান্ধবী। প্রেমিক উধাও হওয়ায় অভিমান করে তিন বান্ধবীই এক সঙ্গে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ ঠাণ্ডু।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের চরসাহাদিয়ার গ্রামের একটি মাঠের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ তিন প্রেমিকা স্থানীয় বাঁশেরবাদা উচ্চ বিদ্যালয়ের অস্টম শ্রেণির ছাত্রী। এরা চরসাহাদিয়ার গ্রামের কবি হোসেনের মেয়ে বর্ষা (১৪), তালেব হোসেনের মেয়ে ববিতা খাতুন (১৪) ও কুবেরের মেয়ে সঙ্গীতা (১৪)।
স্থানীয়রা জানান, চরসাহাদিয়ার মাঠের মধ্যে বর্ষা, ববিতা ও সঙ্গীতা এক সঙ্গে বিষপান করে গোংরাতে থাকে। এ সময় মাঠের লোকজন শব্দ শুনে এগিয়ে যায়। তাদেরকে উদ্ধার করে দাপুনিয়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক আব্দুস সালামের কাছে নিয়ে যায়।
দাপুনিয়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক আব্দুস সালাম জানান, প্রাথমিক অবস্থায় তিনজনের পেট থেকে বিষ বের করা হয়েছে। কিন্তু বর্ষার অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রুত তাকে পরিবারের লোকজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে। ববিতা বিষ মুক্ত হওয়ায় তাকে পরিবারের লোকজন বাসায় নিয়ে যায়। আর সঙ্গীতার অবস্থা কিছুটা খারাপ হওয়ায় তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের টেলিফোন অপারেটর সঙ্গীতার ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার চিকিৎসা চলছে।
পল্লী চিকিৎসক আব্দুল সালাম জানান, বিষ খাওয়া তিনজনের মুখ থেকে তিনি জেনেছেন, পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় পরিবারের লোকজনের ভয়ে এবং নিজেদের লজ্জায় তারা যুক্তি করে এক সঙ্গে বিষপান করেছে।
এদিকে বাঁশেরবাদা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।
পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সবেমাত্র অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। শিক্ষকরা খাতা দেখছেন। কোনো ফলাফল প্রকাশ বা পরীক্ষার মূল্যায়িত কোনো খাতা শিক্ষার্থীদের দেখানো হয়নি।
দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ ঠাণ্ডু জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন মেয়ে তিনটি একটি ছেলের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে প্রেম করে আসছিল। আকস্মিক ভাবে ছেলেটি উধাও হয়ে যায়। এ কারণেই এই তিন স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার উদ্দেশেই বিষপান করেছিল।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়েদুল হক বলেন, ‘খবর পেয়েছি। বিস্তারিত জানি না। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। ফিরে না আসা পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না।’