সিলেট: সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত মাঠেই থাকবে জামায়াত। নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীকে বশে আনতে পারলেও শরিক দলের প্রার্থী জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে বশ মানাতে পারেনি বিএনপি। নির্বাচনের আগ মুহূর্তেও সমঝোতা হতে পারে এমন সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে জোর প্রচারণায় রয়েছেন জামায়াতের মহানগর আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিক দল জামায়াতের এই প্রার্থীকে বশে আনার অনেক চেষ্টা করেছে বিএনপি। কার্যত ব্যর্থই হয়েছে।
সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ছিলেন নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী। আরিফুল হক চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ করে ভোট যুদ্ধে অংশ নিতে অনেকটা অনড়ই ছিলেন তিনি। তবে তাকে ম্যানেজ করতে প্রচুর ঘাম ঝরাতে হয়েছে বিএনপি নেতাদের। এর আগে সেলিমের দীর্ঘ ৩৯ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ‘বহিষ্কার’ শব্দটিও লেপটে গিয়েছিল। সর্বশেষ দলের হাইকমান্ডের চেষ্টায় বদরুজ্জামান সেলিমকে বশে আনা যায়। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে স্বপদে বহাল করা হয়।
নিজ দলের বিদ্রোহীকে বশে আনার পর বিএনপি নেতারা মনোযোগী হন জামায়াতের প্রার্থীর প্রতি। কারণ জুবায়েরকে বশে আনতে পারলে নির্বাচনে আরিফের জয়ের পথ অনেকটা সুগম হয়ে যায়। তবে এই মিশনে পুরোটাই ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে জামায়াত সিলেটে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছে একাধিকবার। নির্বাচন কমিশন থেকে শোকজও পেয়েছে জুবায়ের। আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুদলকে মোকাবেলা করছে তারা। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সমর্থকদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে তাদের। এখন পর্যন্ত বুক ফুলিয়ে মাঠে রয়েছে তারা। বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় হাইকমান্ড জামায়াতের সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা করলেও এর সুফল পাওয়া যায়নি। উল্টো জামায়াত পাত্তাই দিচ্ছে না তাদের।
সর্বশেষ আসন্ন ৩০ জুলাইর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ও জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন।
গত ২৫ জুলাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। এরপর বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জুবায়ের তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। আবার একই দিন বিকেলে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী তার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন।
২০ দলীয় জোট সিলেটের সদস্য সচিব জামায়াত নেতা হাফিজ আব্দুল হাই হারুন বলেন, ‘আমাদের হাইকমান্ড থেকে আগেই সিলেট সিটি জামায়াতকে ছেড়ে দেয়ার দাবি ছিল। যেহেতু স্থানীয় নির্বাচন, সুতরাং জামায়াতের আলাদা নির্বাচন করতে কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। নির্বাচন করলে জোটের কোনো ক্ষতি হবে না।’
২০ দলীয় জোট সিলেটের আহ্বায়ক ও সিলেট মহানগর সভাপতি নাসিম হোসেইন জানান, জামায়াত একটি আলাদা দল। মূলত বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয় হয়ে থাকে। এটা কেন্দ্র দেখবে। স্থানীয়ভাবে কিছু করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না।