শুভ জন্মদিন সজীব ওয়াজেদ জয়

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 09:10:15

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড়ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন আজ শুক্রবার (২৭ জুলাই)। শুভ জন্মদিন সজীব ওয়াজেদ জয়। ৪৭ বছর পূর্ণ করে ৪৮ তম বছরে পা দিয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের এই স্বপ্নদ্রষ্টা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার ঘর আলোকিত করে পৃথিবীর মুখ দেখেন সজীব ওয়াজেদ। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর নানা শেখ মুজিবুর রহমান আদর করে নাম রাখেন জয়।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জয় মায়ের সঙ্গে বাবার কর্মস্থল জার্মানি হয়ে ভারতে যান। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ভারতে। নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজ ও তামিলনাড়ুর পালানি হিলসের কোদাইকানাল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে লেখাপড়া করেন। কিছুদিন  ব্যাঙ্গালোর ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করে পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক পাস করেন জয়।

পরবর্তীতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর অর্জন করেন তিনি। এরপর প্রায় দুই যুগ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে জয় বসবাস করছেন। সেখান থেকেই ব্যবসার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পলিসি মেকিংয়ে কাজ করতে থাকেন।

২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড হিসেবে নির্বাচিত হন জয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টি নিয়ে আসেন। পর্দার অন্তরালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে গোটা দেশে তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটান এই তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

নানা ও মায়ের স্বপ্ন বাস্তবায়নে পর্দার আড়ালে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বাংলাদেশ যে আজ মহাকাশ জয় করেছে, মোবাইল ব্যাংকিং, ডিজিটাল ক্যাম্পেইন, দেশের ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া, ৪ জি নেটওয়ার্ক চালু করার মধ্যদিয়ে দেশব্যাপী প্রযুক্তি বিপ্লব ঘটানোর সিংহভাগ কৃতিত্বই জয়ের। ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর সজীব ওয়াজেদ জয় অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা পদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশের রাজনীতির চিত্রপটে জয়ের আগমন হয় ২০০৪ সাল থেকে। তবে সেসময় তিনি কোন দলীয় পদ-পদবী গ্রহণ করেন নি। এরপর ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন জয়। এর মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসেন জয়। ২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাংগঠনিক সফরের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙা করে তোলেন। জয়ের সাদামাটা উপস্থিতি ও সাবলীল বক্তব্য সাধারণ মানুষের মাঝেও বেশ ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়।

২০১৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে জয়ের দায়িত্বশীল পদ প্রাপ্তি নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। কিন্তু কোন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে এখন আসীন হওয়ার প্রস্তাব বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। সরাসরি রাজনীতির চেয়ে দলীয় তথ্য-প্রযুক্তি, রাজনীতি, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা-বিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন জয়।

আওয়ামী লীগের ‘ভিশন ২০২১’ ও ‘ভিশন ২০৪১’ প্রস্তুত ও বাস্তবায়নের পেছনের কারিগর হিসেবে দেশের তরুণদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে আত্মনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মসূচি ও পদক্ষেপ করছেন তিনি। তরুণদের মতামত, পরামর্শ শুনতে তিনি ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ দুটি গ্রোগ্রাম চালু করেন। যা ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।

এ ছাড়া তিনি তরুণ উদ্যোক্তা ও তরুণ নেতৃত্বকে একসঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত করতে তরুণদের বৃহত্তম প্লাটফর্ম ‘ইয়াং বাংলার’ সূচনা করেন। বর্তমানে বেশির ভাগ সময়েই দেশের বাইরে অবস্থান করতে থাকা সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ফেসবুকে মতামত ব্যক্ত করে থাকেন। ইতোমধ্যেই দলীয় ঘরানায় ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে নাম-ডাক ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্যক্তিজীবনে সজ্জন ও প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর ব্যক্তিত্বের অধিকারী জয় ২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর ক্রিস্টিন ওভারমায়ারকে বিয়ে করেন জয়। জয় ও ক্রিস্টিন দম্পতির একমাত্র মেয়ে সোফিয়া রেহানা ওয়াজেদ। জয়ের বোন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্বখ্যাত অটিজম এক্সপার্ট, খালাত বোন টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য।

জন্মদিনের দিনটিতে পরিবারের সঙ্গে কাটাচ্ছেন জয়। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এখন আমার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। মা জিজ্ঞেস করছিলো আমার জন্য কি রান্না করবে। খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে আমি খুঁতখুঁতে না, মা'র হাতের সকল রান্নাই আমার পছন্দ।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর