উদাসীনতায় পাহাড় ধসে প্রাণহানি বাড়ছে

চট্টগ্রাম, জাতীয়

কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 10:19:08

কক্সবাজার: পর্যটন নগরী কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ে বসবাসরত পরিবারগুলোর উদাসীনতায় বাড়ছে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে বার বার ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাস করার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা।

এদিকে অভিযান পরিচালনা করে ৬২৬ পরিবারকে পাহাড় থেকে নামিয়ে বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জানা যায়, গত বুধবার শহরের বাঁচা মিয়ারঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে চার ভাই-বোন নিহত হয়েছে। এ ঘটনার কিছুদিন আগে সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই বাড়িতে গিয়ে তাদের দ্রুত সেখান থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সেখানে থেকে যায়। আর গত বুধবার সেই বাড়িতেই ধসে পড়ে পাহাড়। আর মৃত্যু হয় চার ভাই-বোনের।

এ ঘটনার জন্য প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকে দায়ী করছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, পাহাড় ধসের পেছনে যতটা প্রকৃতি দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী মানুষ। স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাহাড়গুলো দখল করছে দীর্ঘদিন ধরে। পাহাড় কেটে তারা বসতি গড়ে তুলছে। সেসব বসতি বিক্রি বা ভাড়া দিচ্ছে। আবার দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘরহারা, ছিন্নমূল মানুষরা আশ্রয় নিচ্ছে পাহাড়েই। শুধু তাই নয়, সরকার কর্তৃক পাহাড় ইজারা দেওয়া এবং ইজারাদার কর্তৃক অবৈধভাবে পাহাড় কাটা, গাছপালা কাটা এবং পাহাড়ের ঢালে বসতি স্থাপনের কারণেই প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অসংখ্য প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

আবার অনেকেই বলছেন, স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাহাড়গুলো দখল করছে দীর্ঘদিন ধরে। পাহাড় কেটে তারা বসতি গড়ে তুলছে। সেসব বসতি বিক্রি বা ভাড়া দিচ্ছে। এসব অবৈধ দখলদারদের কারণেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। আর এ জন্য প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না।



জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ৬ শত ২৬ পরিবারকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। আর এসব পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের ১২টি টিম কাজ করছে। অন্যদিকে ভারী বর্ষণের কারণে কক্সবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৫ হাজার ৫৮০ পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছে। এসব মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। তাই তাদের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ সহযোগিতার প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা প্রশাসন।

এ সব তথ্য জানিয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিচ্ছি। সরিয়ে নেয়া পরিবারগুলোকে বিভিন্ন স্কুলে রাখা হচ্ছে। বৃষ্টি না কমা পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। পানিবন্দী হওয়া মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ত্রাণ আসলে বিতরণ শুরু করা হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরাতে দীর্ঘ সময় ধরে অভিযান পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে আবারো ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসতি স্থাপন করছে স্থানীয়রা। গত বুধবার থেকে ১২টি টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি সকল ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীকে সরিয়ে নেয়া যাবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর