উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সিলেট জেলা বিএনপিতে কোন্দল দেখা দিয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়কের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অন্য সদস্যদের।
শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিলেটের ১৩ উপজেলা ও ৫ পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার। তবে পরদিন রোববার (১ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্য সদস্যরা অনুমোদন প্রত্যাখ্যান করেন।
গত বছরের ২ অক্টোবর কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক ও আবুল কাহের চৌধুরী শামীমকে ১ম সদস্য করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
নতুন কমিটির নেতারা ১৭ অক্টোবর ঢাকায় দলের নয়াপল্টনের কার্যালয়ে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন। সেসময় তারেক রহমানের জেলা বিএনপির নেতাদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন। এরপর জেলা বিএনপির নেতারা ১৮ ইউনিটে (১৩ উপজেলা ও ৫ পৌরসভা) কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একাধিক বৈঠক করে।
তবে শেষ পর্যন্ত নানান কারণে কমিটিগুলো হয়নি। পরে গত শনিবার রাতে সকল ইউনিটে কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৯ নেতা। তারা হলেন, সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কাইয়ুম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন, আব্দুল মান্নান, অ্যাডভোকেট এমরান চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন লস্কর, আহমেদুর রহমান চৌধুরী, ইসতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট হাসান পাটোয়ারী রিপন ও মাহবুবুল হক চৌধুরী।
কমিটি প্রত্যাখানকারী নেতারা বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সবশেষ সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত ছিল যে, খসড়া কমিটি তৈরি করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জেলা আহ্বায়ক কমিটির পরবর্তী সভায় অনুমোদন সাপেক্ষে কমিটি প্রকাশিত হবে। কিন্তু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কোনো সভা আহ্বান না করে কমিটি যেভাবে ঘোষণা করেছেন তা সঠিক নয় ও গ্রহণযোগ্য নয়। জেলা আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশের এই সিদ্ধান্ত যেহেতু পূর্ব সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, সেহেতু আমরা কমিটি গঠনের এই প্রক্রিয়াকে প্রত্যাখ্যান করছি। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি গঠনের ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইসতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী বলেন, ইউনিট কমিটিগুলোতে যোগ্যদের স্থান দেয়া হয়নি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সভায় ১৮ ইউনিটের কমিটি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু তা মানা হয়নি।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান।
তবে আহ্বায়ক কমিটির এক নেতা বলেন, নিজেদের পছন্দের লোকদের আহ্বায়ক করতে না পারায় একটি অংশ কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার ইশারায় তারা এসব করেছে। অতীতে তারা ছাত্রদল ও যুবদলের কমিটিও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ওদের আর দলের অবস্থান নেই। তাদের প্রত্যাখ্যানে কিছু আসে যায় না।
সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলী আহমদ বলেন, যারা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা এর মানে জানেন না। নিজের মনের মতও কমিটি না হওয়ায় তারা এসব বলছেন। উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের মতামত ও কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় সকল কমিটি হয়েছে।