অপহরণের এক মাস পেরিয়ে গেলেও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) সাবেক শিক্ষার্থী পাপিয়া ঘোষের (২৪) কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও তার সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ডিআইইউর শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) বিকেলে ধানমন্ডির ক্যাম্পাসের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা আমার বোন নিখোঁজ কেনো প্রশাসন জবাব চাই, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় অপহরণকারীদের ঠাই নাই, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, আমার বোনের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে বান্ধবীর বাসা থেকে বাড়িতে ফেরার সময় ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার ১০নং সেক্টরের ১৭নং রোডের ২০নং বাড়ির সামনে থেকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা প্রাইভেট কারে করে তাকে অপহরণ করে। এ ঘটনার পর পাপিয়ার কোনো সন্ধান না পেয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তার ভাই সম্রাট ঘোষ, মামাতো ভাই সঞ্জয় ঘোষকে সাথে নিয়ে ঢাকা উত্তরা পশ্চিম থানায় বিষয়টি জানান এবং দুর্বৃত্তদের কবল থেকে বোনকে উদ্ধার করার জন্য একটি মামলা (নং-১৬) দায়ের করেন।
মামলার বাদী ভাই সম্রাট ঘোষ জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে পাপিয়া তার বান্ধবী একই ক্লাসের সিরাজুন মনিরা (২৬) ও অংকিতা সাহা নিপার (২৪) সাথে ক্লাসের এস্যাইমেন্ট নিয়ে কাজ করার জন্য উত্তরা পশ্চিম থানার ১০নং সেক্টরের ১৭নং রোডের ২০নং বাড়িতে (লিফটের-৩) যায়। তিনি বলেন, যাওয়ার সময় পাপিয়ার রুমমেট তামান্নাকে ফিরতে দেরি হবে বলে ফোনে জানিয়ে দেয়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাজ শেষে নিজ রুমে ফেরার কথা থাকলেও বাসায় না ফেরার বিষয়টি রুমমেট তামান্নার কাছে জানতে পারেন।
এঘটনার পর সম্ভব্য অবস্থানে অনেক খোঁজ করেও তাকে না পেয়ে অবশেষে উত্তরা থানার ১০নং সেক্টরের ১৭নং রোডের বাসিন্দাদের মাধ্যমে জানতে পারেন ৫ ফেব্রুয়ারি বান্ধবীর বাসা থেকে ফেরার জন্য বাসার নীচে অবস্থান করার সময় পাপিয়াকে একটি প্রাইভেট কারে করে দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে। যা উক্ত এলাকার সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায় অজ্ঞাত একটি প্রাইভেটকার কিছুসময় অবস্থান করে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যায়। ঘটনা জানতে পেরে তিনি ও তার মামাতো ভাই সঞ্জয় ঘোষকে সাথে নিয়ে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
সঞ্জয় ঘোষ বলেন, মামলা দায়ের করার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ পাপিয়াকে উদ্ধার বা তার কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।
তিনি অভিযোগ করে জানান, পুলিশ পাপিয়া ঘোষের সন্ধানে আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকর ভূমিকাই গ্রহণ করেননি যা তাদের কাছে খুবই উদ্বেগের বিষয়।
তিনি বলেন, অপহরণের পর থেকে পাপিয়ার ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন বন্ধ। এদিকে পাপিয়া ঘোষের অপহরণকারীদের গ্রেফতারের দাবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতার প্রতিবাদে ২৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রগতিশীল সংগঠন সমূহের উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। একই সাথে তারা পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করে অবিলম্বে পাপিয়া ঘোষকে উদ্ধার করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য, অপহরণের শিকার পাপিয়া ঘোষ ঢাকা বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ডিজাইনিং বিভাগের (বিইউএফটি) মাস্টার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী।