দুই আইনে সম্প্রচারকর্মীদের সুরক্ষা: তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 21:10:50

সম্প্রচার আইন ও গণমাধ্যমকর্মী আইনের মাধ্যমে দেশের সম্প্রচারমাধ্যমকর্মীরা চাকরিগত সুরক্ষার আওতায় আসবেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (০৬ মার্চ) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র টিএসসি মিলনায়তনে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)'র ২য় সম্মেলনের সূচনাপর্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রচারমাধ্যমের পেশার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, অবশ্যই তাদের চাকরির সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করব খুব শিগগিরই গণমাধ্যমকর্মী আইন মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য। আগামী সংসদ অধিবেশনে সেটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। গণমাধ্যমকর্মী আইন যখন চূড়ান্ত হবে তখন গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির আইনগতভাবে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে। এই ক্ষেত্রে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই।

সম্প্রচার আইন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রচার আইন দেড় বছর আগে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিলো। সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয় এটির ভেটিংয়ের কাজ শুরু করেছে। আমরা আশা করছি দ্রুত ভেটিং হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছে যাবে। আপনারা জানেন সম্প্রচার নীতিমালা রয়েছে, এটি আইনে পরিণত হবে।’

গণমাধ্যম মালিকদের আহবান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির সুরক্ষার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের মালিকপক্ষকে অনেক বেশি তৎপর হতে হবে। ১০ বছর ধরে চাকরি করছেন, হঠাৎ সে জানালো তার চাকরি নেই। এটি গণতন্ত্রের পরিপন্থী, মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এটি কোনওভাবে কাম্য নয়। আমি আশাকরি আইন দুটো পাস হলে এমনটি করা সম্ভব হবে না’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই দেশে বেসরকারিখাতে টেলিভিশন-বেতারসহ সম্প্রচার জগতের যাত্রা শুরু হয়, উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘গত একযুগে এইখাতে ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। কিন্তু এটির পাশাপাশি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলা দরকার ছিল, বিশেষ করে টেলিভিশন সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলা ও ডিজিটালাইজেশন প্রয়োজন ছিল, সেটি হয়নি।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়ার পর আমরা স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই আপনাদের সবার সহযোগিতায় সেই শৃঙ্খলা অনেকটাই ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি, এখন টিভিগুলোর সিরিয়াল ঠিক রাখার জন্য দেন দরবার করতে হয় না।

ড. হাছান বলেন, ‘সারাদেশের টিভি ক্যাবল অপারেটরদের সিস্টেম ডিজিটালাইজড করার জন্য সর্বোচ্চ একবছরের বেশি সময় লাগা সমীচীন নয়, যদিও আলোচনা করেই সময় দেব। কিন্তু, ইচ্ছা থাকলে এক বছরে মধ্যেই তা করা সম্ভব। আর যাদের ইচ্ছা থাকবে না, তারা পারবে না, তখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তখন আমরা প্রয়োজনে নূতন কেবল অপারেটর লাইসেন্স দেবো, যারা ডিজিটালাইজড হয়েই আত্মপ্রকাশ করবে।’

দেশি সম্প্রচারমাধ্যমের টিকে থাকা ও বিকাশের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের নূতন ও ত্বরিত উদ্যোগ ও তার সুফল তুলে ধরেন মন্ত্রী ড. হাছান।

তিনি জানান, 'আগে দেশের পণ্যের বিজ্ঞাপনগুলো বিদেশে চলে যেত, আমরা সেটি বন্ধ করেছি। এখন অন্তত বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন বিদেশি চ্যানেলে প্রচার হয় না। একটি দু'টির বিজ্ঞাপন হয়, কিন্তু তারা সে দেশে নিবন্ধিত। আইনানুসারে কোন ধরনের বিজ্ঞাপনই বিদেশি চ্যানেল প্রচার করতে পারে না। আমরা এটির কড়াকড়ি আরোপের চেষ্টা করেছি। ক্যাবল অপারেটিং ডিজিটাল হলে এটি রোধ সম্ভব হবে। আমরা এক্ষেত্রে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে চাই।'

মন্ত্রী এসময় বিজেসি'র সম্মেলনের ধারাবাহিকতা ও এদেশের সাংবাদিকদের মেধা ও আন্তরিকতার প্রশংসা করেন।

সম্মেলনের 'নীতি সংলাপ - কর্মী সুরক্ষা' শীর্ষক এ সূচনাপর্বে বিজেসি'র সভাপতি রেজওয়ানুল হক রাজার সভাপতিত্বে ও সদস্য-সচিব শাকিল আহমেদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল ও বিজেসি'র উপদেষ্টা একাত্তর টিভি'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু।

এ সম্পর্কিত আরও খবর