খুলনা নগরীর খালিশপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুল শিক্ষক কাজী তাসফিন হোসেন তয়ন (৩২) হত্যা মামলায় ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (৮ মার্চ) দুপুরে খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম খান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কাজী মুরাদ, কাজী ফরহাদ হোসেন, মো. জাকির, কাজী রওনাকুল ইসলাম রনো ও সাইফুল। এদের মধ্যে জাকির পলাতক রয়েছেন। এছাড়া আসামি কাজী সাব্বির হোসেন ফাহিম ও কাজী মাসুমকে খালাস প্রদান করা হয়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একই ট্রাইব্যুনালে আর্গুমেন্ট (যুক্তিতর্ক) শেষ হয়। লোমহর্ষক এ হত্যা মামলার পাঁচজন আসামি জামিনে ছিলেন। ওইদিন আদালতে হাজির হলে তাদেরকে সি-ডব্লিউ মুলে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কাজী তাসফিন হোসেন তয়ন (৩২) ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট বিকেলে নিখোঁজ হন। তার বাবা কাজী ফেরদৌস হোসেন তোতা ওই বছর ৮ সেপ্টেম্বর খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর খালিশপুর থানা পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সন্দেহজনক আসামি সাইফুল ইসলাম গাজীকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল স্বীকার করেন, তিনিসহ তার সহযোগীরা ২৮ আগস্ট রাত ৯ থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে তয়নকে হত্যা করে মরদেহ বয়রা পুলিশ লাইনের পশ্চিম পাশের মোস্তফা কামালের ডোবা জমির উত্তর পাশের কচুরিপানা ও হোগলা বনের মধ্যে চাপা দিয়ে রাখেন। সাইফুলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী উক্ত ডোবা থেকে পিলার ও বাঁশের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় তয়নের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আসামি সাইফুল ও অপর সহযোগী আসামি কাজী মুরাদ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে তারা জানান, তারা দু’জনসহ আরও কয়েকজনে মিলে তয়নকে হত্যা করেন। জবানবন্দিতে কাজী ফরহাদ হোসেন, কাজী সাব্বির হোসেন ফাহিম, কাজী রওনাকুল ইসলাম রনো, কাজী মাসুম ও মো. জাকিরের নাম উল্লেখ করা হয়। পুলিশ পরে মো. জাকির ছাড়া বাকি আসামিদের গ্রেফতার করেন। এ ঘটনায় তয়নের বাবার দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক এসআই মো. মিজানুর রহমান সাতজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখিত ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনই আদালতে তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।