রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে টেন্ডার ছাড়াই প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল কেনার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
বার্তা২৪.কম'র কাছে দুর্নীতির সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ ওঠার পর তদন্তের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়েছিলাম। অনুমতি পাওয়ার পর আমরা তদন্ত শুরু করি। সবশেষ বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) আমরা স্টেশন পরিদর্শন এবং অভিযোগগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখে এসেছি। সেখানে স্পষ্টত অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোনো রকম দরপত্র আহ্বান ছাড়ায় ২০১৯ সালের অক্টোবরে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের জন্য বেশকিছু ফার্নিচার, ট্রেনের বগি চিহ্নিতকরণ এলইডি লাইট ও অভ্যর্থনার জন্য এলইডি লাইট ক্রয় করা হয়। আর ওইসব মালামাল সরবারহ করেন আলমগীর হোসেন নামের একজন ঠিকাদার। সরবরাহকৃত এসব মালামাল নভেম্বর থেকে স্টেশনে ব্যবহারও শুরু হয়। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেগুলোর অধিকাংশই নষ্ট হয়ে যায়।
অভিযোগ ওঠে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের তৎকালীন প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ তার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারের মাধ্যমে মালামালগুলো সরবরাহ করে নেন। যাতে করে পরে ইচ্ছামতো বিল উত্তোলন করা যায়। এটি করতে গিয়ে স্টেশনে অপ্রয়োজনে কিছু ভিআইপি চেয়ারও (গদিওয়ালা) সরবরাহ করা হয়। চেয়ারগুলোর জায়গা না হওয়াই স্টেশনের যাত্রীদের অপেক্ষারত কক্ষের বাইরেও রাখা হয়।
অথচ বছরখানেক আগেও এই স্টেশনেই চেয়ার সরবরাহের নামে প্রায় কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ ওঠে। ওই সময় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা মূল্যের স্টিলের চেয়ারের মূল্য দেখানো হয় ৪০-৪৫ হাজার টাকায় ও ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার সোফাসেটের দাম ৮০-৮৫ হাজার টাকা দেখানো হয়।
দুদকের তদন্তে প্রমাণ মিললেও বিষয়টি নিয়ে এখনও মুখ খুলছেন না রেলওয়ের কর্মকর্তারা। টেন্ডার ছাড়াই মালামাল কেনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন শেখ। তিনি দাবি করেন, যে ধরনের মালামাল সরবরাহ করা হয়েছিল, সেটা কেনার কোনো নির্দেশনা আমার দফতর থেকে যায়নি। যারা এই নির্দেশনা দিয়েছেন, তারাই বিল পরিশোধ করবেন। আমার দফতর এই কাজের কোনো বিল পরিশোধ করবে না।